জয় বাংলাদেশ: আইন শক্তিশালী করতে পারলে দেশে খেলাপি ঋণ ৬০ শতাংশ আদায় করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার।বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
আবদুল হাই সরকার বলেন, আইনের নানা রকমের ফাঁকফোকর রয়েছে। সে কারণে খেলাপি ঋণ আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। আইন শক্তিশালী করতে পারলে ব্যাংক খাতে যে খেলাপি ঋণ রয়েছে, তার ৬০ শতাংশ আদায় সম্ভব হবে। কারণ, বেশির ভাগই ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি। এ নিয়ে বিএবির পক্ষ থেকে তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করে নীতি প্রণয়ন করতে গভর্নরকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এতে তাঁদের কোনো রকমের সমস্যা হবে না।
বেশ কয়েকটি ব্যাংকে বর্তমানে তারল্য–সংকট চলছে, সে বিষয়ে গভর্নর কোনো কিছু বলেছেন কি না, জানতে চাইলে আবদুল হাই সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ৮ থেকে ৯টি ব্যাংকে তারল্য–সংকট থাকতে পারে, কিন্তু সব ব্যাংকে তারল্য–সংকট নেই। এ বিষয়ে গভর্নর ওয়াকিবহাল। তিনি জানান, ব্যাংক ব্যবস্থাপনা ঠিক আছে। ছয় মাসের মধ্যে ব্যাংকিং খাতে একরকম পরিবর্তন দেখা যাবে।
বিএবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, যেসব ব্যাংকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী। যাঁদের নেতৃত্বে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা ব্যাংক খাতে ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। তাই তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সংকটে পড়া ব্যাংকগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে তারল্য–সংকট কাটিয়ে উঠবে বলে জানান তিনি।
সংকটে পড়া ব্যাংকগুলো কীভাবে ভালো হবে, এই প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি। তারল্য–সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করছি। ব্যাংকটির (ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক) যে জটিল সমস্যা তৈরি হয়েছে, সেগুলো আমরা দুই সপ্তাহের মধ্যে ঠিক করে ফেলব।’
ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়ে যথেষ্ট আদালত নেই। চট্টগ্রামে একটি আদালত। ঢাকার পরই চট্টগ্রাম বৃহত্তর শহর। কিছু কিছু ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশি তদারকি করছে, কিছু ব্যাংকে কম। আমরা চাই ভবিষ্যতে যেন আমাদের পরামর্শে সংস্কার করা হয়। অনেক জায়গায় সংস্কার করা হয়েছে, এর সঙ্গে এখনই ব্যাংক কোম্পানি আইন সংস্কার করা উচিত।’
সভার শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হোসনে আরা শিখা জানান, খেলাপি ঋণ বন্ধ করা বা কোনো কারণে কেউ যদি খেলাপি হয়ে যান, তাহলে রিট করে তা বন্ধ রাখার যে সংস্কৃতি আমাদের ব্যাংকিং খাতে রয়েছে, সেটা বন্ধ করতে হবে। এটা বিএবির দাবি ছিল। এ ক্ষেত্রে খেলাপি ঋণসংক্রান্ত নীতিমালা পরিবর্তন করতে হবে। গভর্নর এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।
মুখপাত্র জানান, ব্যাংকের এমডি ও কর্মকর্তাদের বেতনের ক্ষেত্রে বর্তমানে যে নির্দেশনা রয়েছে, সেটি ব্যাংকের ওপর ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএবি। গভর্নর বলেছেন, এটা ধীরে ধীরে ব্যাংকের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।