দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় আজ রোববার (৩ মার্চ) আত্মসমর্পণের পর জামিন পেয়ে জজ আদালত প্রাঙ্গণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আজকের এ ছবিটা আপনারা তুলে রাখুন। দুর্নীতি দমন কমিশন ও বটতলার এটি একটি ঐতিহাসিক ছবি হয়ে থাকবে।’
দুদকের বিচারের কাঠগড়ায় একজন নোবেল বিজয়ীকে দাঁড়াতে হলো- এটা রেকর্ডেড বলে উল্লেখ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘এটা যুগ যুগ ধরে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে। এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা যেখানে একজন নোবেলবিজয়ীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, জালিয়াতির অভিযোগ, অর্থ পাচারের অভিযোগ এনেছে। আমি একা নই, আরও ৭ জন- যারা সারাজীবন কঠোর পরিশ্রম করেছে গরিব মানুষের জন্য। তারা চাকরি করতে এখানে আসেননি, তারা জীবনদানের জন্য এখানে এসেছেন। তারাও অর্থ আত্মসাৎ, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত। এটা গুরুত্বপূর্ণ ছবি হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে, আইন মানুষের শুভকামনা করে রচনা করা হয়। আইন মানুষের মনে স্বস্তি আনে, শান্তি আনে। আইন মানুষের মনে আশঙ্কাও জাগায়, ভয়ঙ্কর শঙ্কা জাগায়। আইনটাকে আমরা কোনদিকে নিয়ে যাব, সেটা সমাজের ইচ্ছা। আপনারা ঠিক করেন, দুর্নীতি দমন কমিশন যে আজ একটা বিচারে বসলো, এ বিচারটা সঠিক কারণে হয়েছে কিনা, সঠিকভাবে হয়েছে কিনা।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা এগুলো স্কুলে পড়বে। যখন নোবেল পুরস্কারের কথা হবে, তখন বলা হবে- উনার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের দায়ে, জালিয়াতির দায়ে…। তারা কনফিউজড হয়ে যাবে যে, আসলটা কী। তারা বলবে, এটা কি মুখোশ, আসল মানুষটা কে? সে আবার একা না, তার সাঙ্গপাঙ্গও আছে।
তিনি বলেন, আমরা যে আজ এখানে উপস্থিত হয়েছি, এটা এখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, দেশের মধ্যেও সীমাবদ্ধ নয়। সারা দুনিয়াজুড়ে লক্ষ্য করছে যে, এ বিচারের কী হলো। আমরা যা যা করছি, তারা সবিস্তারে এটা দেখছে।
এর আগে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. ইউনূসসহ ৪ আসামির জামিন দিয়েছেন শ্রম আপিল ট্রাইবুনাল। গত ১ ফেব্রুয়ারি আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। আজ মামলাটির জন্য ধার্য তারিখ ছিল। সূত্রে জানা যায়, দুদকের অনুমোদিত চার্জশিটে আসামি ছিল ১৩ জন। নতুন করে একজন আসামি যুক্ত হয়েছে।