আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট অতি বিপজ্জনক হারিকেন বেরিল ক্যারিবীয় অঞ্চলের উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানার পর আরো শক্তিশালী হয়ে ক্যাটাগরি-পাঁচ মাত্রার ঝড়ে রূপ নিয়েছে।
শক্তিশালী হারিকেন বেরিল দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ জ্যামাইকার দিকে ধেয়ে যাচ্ছে। বুধবারের মধ্যে এটি সেখানে আঘাত হানতে পারে।
এই ঝড়ের কারণে ইতোমধ্যে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বেরিল স্থানীয় সময় সোমবার (১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে ক্যারিবিয়ান সাগরের গ্রেনাডার ক্যারিয়াকউ দ্বীপে ঘণ্টায় ১৫০ মাইল বেগে আঘাত হানে। চার মাত্রার ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আঘাত হানলেও এটি এখন পাঁচ মাত্রায় রূপ নিয়েছে।
ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) মঙ্গলবার জানিয়েছে, এটি এখনও শক্তিশালী হচ্ছে। বেরিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬৫ মাইল বেগে বয়ে যেতে পারে।
গ্রেনাডার প্রধানমন্ত্রী ডিকন মিচেল সোমবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ক্যারিয়াকো ও পেটিট মার্টিনিকে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের খবর পাওয়া গেছে। দেড় ঘণ্টায় ক্যারিয়াকোকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে বেরিল। এখনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনে অন্তত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শত শত বাড়িঘর ও ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রালফ গনসালভেস।
এর আগে শক্তিশালী হারিকেন বেরিলের কারণে ক্যারিবীয় দেশগুলোর বিমানবন্দর ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। বাসিন্দারের নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। রোববার রাতে ক্যারিবীয় অঞ্চলের কয়েক ডজন ফ্লাইট বাতিল করা হয়। এ ছাড়া এই অঞ্চলের বাসিন্দারের ঝড়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আটলান্টিক হারিকেন মৌসুমের শুরুতেই এই ধরনের শক্তিশালী ঝড় তৈরি হওয়া অত্যন্ত ব্যতিক্রম। আটলান্টিক হারিকেন মৌসুম জুনের শুরু থেকে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত চলে।
তবে ইউএস ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ) মে মাসের শেষের দিকে বলেছিল, এই বছরটি একটি ব্যতিক্রমী হারিকেনের মৌসুম হতে পারে, যার মধ্যে সাতটি ক্যাটাগরি-৩ বা তার বেশি ঝড় হবে৷
সংস্থাটি এ জন্যে প্রশান্ত মহাসাগরের লা নিনা প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হারিকেনসহ চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো ঘন ঘন ঘটছে এবং এসব আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠছে।