Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeস্বদেশ সংবাদক্রমশ বেড়েই চলছে রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক

ক্রমশ বেড়েই চলছে রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক

জয় বাংলাদেশ: সারাদেশের ন্যায় শরীয়তপুরে বাড়ছে রাসেলস ভাইপার সাপের আতঙ্ক। এই আতঙ্কের সূত্র ধরে জুন মাসে জেলার বিভিন্ন উপজেলার বসত-বাড়ি, ফসলী জমি ও নদী-নালা থেকে প্রতিদিনই উদ্ধার হয়েছে একাধিক বিষধর এই সাপ।

গেলো মাসে শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ১৫০টি রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার করে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে মেরেছে আতঙ্কিত জনতা। কেউ আবার রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার করে তুলে দিয়েছেন স্নেক রেসকিউ টিমের হাতে। এভাবে রাসেলস ভাইপার সাপ ধরা পড়ায় শরীয়তপুরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনমনে ভয় ও আতঙ্ক।

সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যের হিসেব অনুযায়ী (২৯ জুন) শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, জাজিরা ও গোসাইরহাটসহ অন্যান্য উপজেলা থেকে এসব রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার হয়।

জানা যায়, বাংলাদেশে রাসেলস ভাইপার সাপ বিলুপ্ত ঘোষণা করার পরে ২০২০ সালের ১০ জুলাই শরীয়তপুরের পদ্মা ও মেঘনা বিধৌত চরাঞ্চল কাঁচিকাঁটা ইউনিয়নের মাথাভাঙা গ্রামের এক জেলের মাছ ধরার ফাঁদে জেলায় সর্বপ্রথম রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পরে সাপটি স্থানীয় সাপুড়ে মিনু ঢালী সংরক্ষণ করে রাখার কয়েক দিনের মধ্যে চট্টগ্রামের ভেনম রিসার্চ সেন্টার কর্তৃপক্ষ এসে সাপটি গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য নিয়ে যায়। এরপর জেলায় কয়েক বছর রাসেলস ভাইপার সাপের দেখা না মিললেও গত দেড় মাসে সখিপুরের চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই একাধিক স্থানে দেখা মিলছে বিষধর এই সাপটির।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ বছর শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, জাজিরা, গোসাইরহাট ও নড়িয়া উপজেলায় রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপের দেখা মিলেছে। তবে এখন পর্যন্ত শরীয়তপুর সদর ও ডামুড্যা উপজেলায় রাসেলস ভাইপার সাপের উপদ্রবের খবর পাওয়া যায়নি। চলতি মাসে শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ১৫০টি বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮০টিরও বেশি রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধারের ঘটনাস্থলের তথ্য জানা গেছে। চলতি মাসে ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ২৭টি রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার করে পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয়রা। এরমধ্যে উপজেলার বিভিন্নস্থানে ৮টিসহ সখিপুরের উত্তর ও দক্ষিণ তারাবুনিয়া এলাকায় ৫টি, চরসেনসাস এলাকায় ৪টি, চরভাগায় ৬টি, কাঁচিকাঁটায় ৩টি ও সখিপুর ইউনিয়ন এলাকা থেকে ২টি রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার করা হয়েছে।

জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের পাঁচু খার কান্দি, কুন্ডেরচর এলাকার ফসলী মাঠ, মাঝিরচর, পালেরচরের মুন্সী বাড়ি, পূর্ব নাওডোবা এলাকার পৈলান মোল্লার কান্দি এলাকা থেকে স্থানীয়রা বাচ্চাসহ ৪৯ টি রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার করে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে মেরেছে। এছাড়াও জব্বার আলী আকন কান্দি গ্রামের সোহেল মাদবরসহ কয়েকজন একটি রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার করে স্নেক রেসকিউ টিমের কাছে তুলে দিয়েছেন। এছাড়াও নড়িয়া উপজেলার নড়িয়া বাজার ও ব্রিজ এলাকা থেকে গত এক সপ্তাহে ২টি রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার হয়েছে। এভাবে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন উপজেলার বসত বাড়িসহ ফসলী জমির মাঠ থেকে বিষধর সাপ উদ্ধার হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে জেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে।

বর্তমানে রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়ে ইব্রাহিম নামে এক যুবক শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সখিপুর এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, প্রায় দেড় মাস ধরে প্রতিদিন মানুষের বসত-বাড়ি, ফসলী মাঠ থেকে একাধিক রাসেলস ভাইপার সাপ বাচ্চাসহ উদ্ধার হচ্ছে। শরীয়তপুরের অন্যান্য অঞ্চল থেকে সখিপুরে রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার হওয়ার ঘটনা বেশি। এর অন্যতম কারণ পদ্মা বেষ্টিত চরাঞ্চল। প্রায় এক মাস আগেও সখিপুর বাজারের এক ব্যবসায়ীর সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে। চরাঞ্চলের মানুষ সাপে কাঁটলে ওঝার কাছে যায় বলেই এমন মৃত্যু হয়। সাপের দংশন থেকে রক্ষা পেতে সচেতন হয়ে চলাফেরা ও সাপে কাঁটলে দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রচারণা করার দাবি জানাই আমি।

সখিপুরের সাপুড়ে বলেন, শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিনই ছোট বড় আকারের রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার হচ্ছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments