‘সামরিক সহযোগিতার’ ক্ষেত্র বাড়াতে চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। এই চুক্তিকে মালদ্বীপের ভারতীয় বলয় থেকে বেরিয়ে আসার একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভারতীয় সেনাদের দ্বীপপুঞ্জটি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে নয়াদিল্লির সঙ্গে মালের সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
মালদ্বীপের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনাদের দ্বীপরাষ্ট্রটি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চীনের সঙ্গে একটি ‘সামরিক সহায়তা’ চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন তারা।
মাইক্রো ব্লগিং সাইট ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলা ও সামরিক সহায়তা পেতে চীনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে মালদ্বীপ।’
জানা গেছে, ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন মালদ্বীপের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও চীনের একজন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা। প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে সুসম্পর্ক ছিল মালদ্বীপের।
কিন্তু গত বছরের নির্বাচনে ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় আসেন চীনপন্থী রাজনীতিক মোহাম্মদ মুইজ্জু। তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের সম্পর্কে তিক্ততা বাড়তে থাকে।
ভারত মহাসাগরের পূর্ব-পশ্চিম শিপিং রুটের গুরুত্বপূর্ণ একটি অবস্থানে রয়েছে মালদ্বীপ। সেখানে দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে ভারত।
ভারতীয় সামরিক বাহিনী তাদের সেনাদলকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করবে। কারণ, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট তাদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মালদ্বীপকে তার সামুদ্রিক সীমা পর্যবেক্ষণে ভারত তিনটি অনুসন্ধান বিমান দিয়েছিল। সেগুলো পরিচালনায় সাহায্য করতে দেশটিতে সেনা মোতায়েন করে ভারত। আর সেসব সেনাকে আগামী ১০ মের মধ্যে মালদ্বীপ ছাড়তে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিমানগুলো পরিচালনায় সামরিক কর্মীদের পরিবর্তে বেসামরিক কর্মীদের কাজে লাগানো হতে পারে বলে আশা করছে ভারত।
গত সপ্তাহে ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, মালদ্বীপ থেকে ১৩০ কিলোমিটার উত্তরের ভারতীয় লাক্ষাদ্বীপপুঞ্জের মিনিকয় থেকে ‘অপারেশনাল নজরদারি’ আরও বাড়ানো হবে।
গত মাসে চীনের সামুদ্রিক গবেষণা জাহাজ জিয়াং ইয়াং হং ৩-কে মালদ্বীপে নোঙরের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। জানুয়ারিতে বেইজিং সফরের গিয়ে চীনের সঙ্গে অবকাঠামো, জ্বালানি ও কৃষি সম্পর্কিত কয়েকটি চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট।
মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কাসহ ভারত মহাসাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবে বেশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে ভারত।