জয় বাংলাদেশ: মোহাম্মদ আলী আরাফাত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও মাদকাসক্ত আখ্যা দিয়ে বিতর্কিত ও সমালোচিত হয়েছিলেন। পদচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভার তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে গত ২২ জুলাই সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরাফাত বলেছিলেন, ‘আপনারা টেলিভিশনে দেখেছেন ওদের চেহারা, এপ্রোচ, এক্সপ্রেশন, ড্রেসআপ! কোথাও আপনাদের মনে হয়েছিল কোমলমতি ছাত্র এরা? পুরো বুঝা যাচ্ছে এটা একটা জঙ্গি দল। আসছে, আক্রমণ করছে আর চলে যাচ্ছে। এবং এই ধরণের প্রমাণও পাওয়া গেছে, অনেককে ড্রাগ দেওয়া হয়েছে। এজন্য তারা বুক পেতে পুলিশের সামনে চলে আসে।’
এর আগে কয়েক বছর ধরে আওয়ামী লীগের হয়ে নানা বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত ছিলেন আরাফাত। টক শোতে আওয়ামী লীগ ও সরকারের পক্ষে কথা বলেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হন তিনি।
গত বছরের জুলাইয়ে ঢাকার ‘অভিজাত এলাকা’ হিসেবে পরিচিত ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। পরে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়ে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভায় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রির দায়িত্ব পান মোহাম্মাদ এ আরাফাত।
২০২৩ জুলাইয়ের উপ-নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন হিরো আলম। নির্বাচনে প্রচারণা চালানোর সময় হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। মোহাম্মদ আলী আরাফাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। হিরো আলমের দাবি ছিল, আরাফাতের নির্দেশেই তার ওপর হামলা করা হয়েছিল।
সেই নির্বাচনে ভোট পড়ে ১১ শতাংশের কিছু বেশি। প্রদত্ত ভোটের সিংগভাগই পান আরাফাত। যে ৩৭ হাজার ৩৭ জন ভোটার কেন্দ্রে এসেছেন, তার মধ্যে ২৮ হাজার ৮১৬ জনই রায় দিয়েছেন তার পক্ষে। হিরো আলমের পক্ষে ছিলেন ৫ হাজার ৬০৯ জন। নির্বাচনে জয় পরাজয়ের চেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে অবশ্য ভোটের শেষভাগে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা, যার প্রতিক্রিয়া এসেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং বিএনপির পক্ষ থেকেও।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর অন্যান্য আওয়ামী নেতার মতোই আত্মগোপনে ছিলেন আরাফাত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নির্বিচারে সাধারণ মানুষ হত্যার অভিযোগের বিভিন্ন মামলার আসামি তিনি।