জয় বাংলাদেশ : মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের ফলে টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারেন। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ এই ধনী নির্বাচনে খোলাখুলিভাবে ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন এবং তাঁর পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন। দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের প্রচার দলের সিনিয়র উপদেষ্টা ব্রায়ান হিউজ জানিয়েছেন, ইলন মাস্ককে একটি ‘কমিশনের’ দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবছেন ট্রাম্প। এই কমিশনের কাজ হবে সরকারকে আরও বেশি দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং করদাতাদের প্রতিটি ডলার যাতে ভালোভাবে ব্যবহার করা হয়, তা নিশ্চিত করা। এনবিসি নিউজ এ কথা জানিয়েছে।
ব্রায়ান হিউজ ‘একজন সৃজনশীল, একজন উদ্ভাবক’ হিসেবে ইলন মাস্কের প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, মাস্ক ‘সৃষ্টিশীল, আধুনিক ও দক্ষ ব্যবস্থা’ গড়ে তোলার মাধ্যমে ইতিহাস রচনা করেছেন। তিনি আরও জানান, ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বাস করেন যে মার্কিন ফেডারেল সরকারের দক্ষতা বাড়াতে ইলন মাস্ক সহায়তা করতে পারেন।
কর হ্রাস মাস্ককে সাহায্য করতে পারে
ডোনাল্ড ট্রাম্প কর হ্রাসের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা ইলন মাস্ককে সুবিধা দিতে পারে। করপোরেট কর ও ধনীদের ওপর আরোপ করা কর কমাতে ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই সরব। নিজের প্রথম মেয়াদে তিনি করপোরেট কর ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২১ শতাংশে নামিয়েছিলেন। এর পর থেকে তিনি কর হ্রাস সম্প্রসারণের জন্য তাঁর ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছেন।
সেন্টার ফর বাজেট অ্যান্ড পলিসি প্রায়োরিটিজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প যে কর হ্রাসের পরিকল্পনা করছেন, আগামী এক দশকে তার ৪১ শতাংশ সুবিধা উচ্চ আয়ের পরিবারগুলো পাবে। করের হার হ্রাস ও বিশেষ কর ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে এসব পরিবার এই সুবিধা পাবে।
মাস্কের কোম্পানির নীতি সহায়তা
ইলন মাস্কের যেসব কোম্পানি রয়েছে, সেগুলোকে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে কম নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার মুখোমুখী হতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে স্পেসএক্স এই সুবিধা বেশি পাবে। এই কোম্পানি ইতিমধ্যে শত শত কোটি ডলারে সরকারি ঠিকাদারি বাগিয়ে নিয়েছে। আগামী কয়েক বছরে প্রতিরক্ষা বিভাগ ও নাসার কাছ থেকে আরও চুক্তি পেতে পারে কোম্পানিটি।
ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন থেকে নভোচারীদের নিয়ে আসা বা সেখানে পাঠানোর জন্য এখন শুধু স্পেসএক্স কাজ করছে। বোয়িংয়ের স্টারলাইনার স্পেসক্রাফট নিয়ে ঝামেলা চলার কারণে এখন ইলন মাস্কের কোম্পানির ওপর নভোচারী পরিবহনের জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে।
তবে বাইডেন প্রশাসনের সময়ে মাস্কের বিভিন্ন কোম্পানিকে নানা রকম নিয়ন্ত্রণমূলক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হতে হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্পেসএক্সের উড্ডয়ন এলাকায় পরিবেশ উদ্বেগসংক্রান্ত জটিলতা এবং টেসলার কারখানায় কিছু সমস্যা। মাস্ক প্রতিদিন ১০ লাখ ডলারের যে পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন, তা নিয়েও তাঁকে আইনি ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল।
নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার পরিবর্তন
গনজাগা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ অ্যাঞ্জেলা অ্যানেইরস মনে করেন, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে। এসব পরিবর্তন সম্ভবত ইলন মাস্কের কোম্পানিগুলোকে সুবিধা দিতে পারে। ফেডারেল সংস্থাগুলো এখন নিয়মনীতি পরিপালনের ঘাটতির বিষয়গুলোর তদন্ত বাদ দিয়ে অভিবাসীসংক্রান্ত বিষয়গুলোতে বেশি মনোযোগ দিতে পারে।