জয় বাংলাদেশ : গর্ভপাতের অধিকারকে কেন্দ্রে রেখে নির্বাচনের প্রচার চালিয়েছিলেন কামলা হ্যারিস। ভেবেছিলেন, এর মধ্য দিয়ে তিনি নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পারবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হাসলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুরুষদের ভোটকে পুঁজি করেই জয়ের বন্দরে পৌঁছেছেন তিনি। বিশেষ করে তরুণদের ভোট বেশি পেয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প যে পুরুষদের ভোট বেশি পাবেন, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে গত নির্বাচনের চেয়ে এবার পুরুষ ভোট বেশি পেয়েছেন ট্রাম্প। ২০২০ সালের নির্বাচনে ৫১ শতাংশ পুরুষ ভোট পেয়েছিলেন ট্রাম্প। এনবিসির করা এক বুথফেরত জরিপে দেখা গেছে, এবার ট্রাম্প পুরুষদের ভোট পেয়েছেন ৫৪ শতাংশ।
তবে একটা বিষয় এবার ঘটেছে ভ্রু কুঁচকানোর মতো। বুথফেরত জরিপে দেখা গেছে, ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের ৪৯ শতাংশ ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন। অতীতের নির্বাচনগুলোতে তরুণ ভোটারদের বামপন্থীদের দিকে ঝুঁকে থাকার যে ইতিহাস, এর মধ্য দিয়ে তা ভেঙে দিয়েছেন ট্রাম্প।
পুরুষদের ভোট পেতে তাঁদের মনরক্ষার কথা বলেই নির্বাচনের প্রচার চালাতে দেখা গিয়েছিল ট্রাম্পকে। তারই প্রতিফলন ঘটেছে ভোটের ফলাফলে। তরুণ ভোটারদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেন এমন একজন রক্ষণশীল রাজনৈতিক কর্মী চার্লি কার্ক। এ বিষয়ে তিনি এএফপিকে বলেন, ‘এ দেশে (যুক্তরাষ্ট্রে) যদি আপনি পুরুষ হন আর ট্রাম্পকে ভোট না দেন, তাহলে আপনি পুরুষই নন।’
এডিসন রিসার্চের করা বুথফেরত জরিপে দেখা গেছে, কামলা হ্যারিস নিজে নারী হওয়ার পরও গত নির্বাচনে বাইডেন যত শতাংশ নারী ভোট পেয়েছিলেন তার চেয়ে কম পেয়েছেন তিনি। যদিও তিনি ট্রাম্পের চেয়ে বেশি নারী ভোট পেয়েছেন। অবশ্য শেতাঙ্গ নারী ও তরুণীদের ভোটের ক্ষেত্রে কমলাকে ছাড়িয়ে গেছেন ট্রাম্প। জরিপে দেখা গেছে, বয়স ২৯ বছরের কম এমন নারী ভোটারদের ৬১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প। বিপরীতে এই বয়সী নারীদের মাত্র ৩৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন কামলা।
এবার ট্রাম্পের পক্ষে লাতিনো পুরুষ ভোটারদের ভোটের হারও এক লাফে অনেক বেড়েছে। গতবার যেখানে তিনি ৩৬ শতাংশ লাতিনো পুরুষদের ভোট পেয়েছিলেন, এবার তা বেড়ে ৫৪ শতাংশ হয়েছে। এ ছাড়া বয়স ৪৫ বছরের কম এমন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের মধ্যেই ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এই বয়সী প্রতি ১০ জন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের মধ্যে তিনজনই এবার ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন, যা ২০২০ সালের তুলনায় দ্বিগুণ।
স্পেন্সার থমাস নামের একজন বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী এএফপিকে বলেন, ‘আমার যেসব সহপাঠী ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছে তাদের মাথায় ছিল অর্থনীতির বিষয়টি। ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কাছে নারী ও গর্ভপাতের অধিকারের বদলে অর্থনীতিসহ এ ধরনের বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।’
ক্ষমার অপেক্ষায় সহিংসতায় অভিযুক্তরা
২০২০ সালে নির্বাচনে হারলেও ফল মানতে অস্বীকৃতি জানান ট্রাম্প। এখানেই ক্ষান্ত দেননি তিনি। ট্রাম্পের উসকানিতে তাঁর কর্মী–সমর্থকেরা ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে হামলা করেছিলেন। সহিংসতার এ ঘটনায় যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, ট্রাম্প আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় তাঁরা প্রেসিডেন্টের ক্ষমা পাওয়ার আশা করছেন।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ওই ঘটনায় ১ হাজার ৫৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৯৪০ জনের বেশি দায় স্বীকার করেছেন। এর মধ্যে যাঁদের বিচার শেষ হয়েছে তাঁদের ১৯৫ জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।