জয় বাংলাদেশ: সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ফিরেছেন। তবে এরপর তাঁর মালিকানাধীন ট্রাম্প মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপের শেয়ারের রেকর্ড দরপতন হয়েছে।
মঙ্গলবার ট্রাম্প মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপের শেয়ারের দাম এ পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ কমে যায়। তবে দিন শেষে এই কোম্পানির শেয়ারের দাম ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ২১ দশমিক ৪২ ডলারে নেমে আসে। রয়টার্স জানিয়েছে, এ নিয়ে টানা আট অধিবেশনে ট্রাম্পের কোম্পানির শেয়ারের দাম কমল।
মার্কিন নির্বাচনের আগে যেসব জনমত জরিপ হচ্ছে, সেখানে ট্রাম্পের অবস্থান ক্রমেই নিম্নমুখী। বাজির বাজারেও তাঁর দর কমছে। এসব কারণে ট্রাম্পের মিডিয়া কোম্পানির শেয়ারের দর কমছে। অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্প দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হবেন কি না, এসব জরিপ সে ব্যাপারে ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের মিডিয়া কোম্পানি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল যতটা না বিনিয়োগযোগ্য কোম্পানি, এটি তার চেয়ে তাঁর জনপ্রিয়তার মাপকাঠি হিসেবে বেশি বিবেচিত হয়। এই কোম্পানির শেয়ারদর মৌলভিত্তির চেয়ে অনেক বেশি। অর্থাৎ এর শেয়ারের দাম বাড়লে বোঝা যায়, ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। দাম কমলে বোঝা যায়, তাঁর জনপ্রিয়তা কমছে।
ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড অ্যাকুইজিশন করপোরেশনের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পর চলতি বছরের ২৬ মার্চ ট্রাম্প মিডিয়া শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সেদিন এই কোম্পানির শেয়ারদর ৭৯ দশমিক ৩৮ ডলারে উঠেছিল। কিন্তু এর পর থেকে ট্রাম্প মিডিয়ার শেয়ারের দর কমছে। বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এই কোম্পানির ক্ষতি হয়েছে ১৬ দশমিক ৪ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার; এই সময়ে কোম্পানির রাজস্ব আয় হয়েছে মাত্র ৮ লাখ ৩৭ হাজার ডলার। এই কোম্পানির বাজার মূলধন ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ৪৩০ কোটি ডলার। বছরের শুরুতে যা ছিল ৮০০ কোটি ডলার।
তবে ট্রাম্প এখনো এই কোম্পানিতে তাঁর শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না। আগামী মাসে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি ৬০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন।
বিশ্লেষকেরা বলেন, ট্রাম্প মিডিয়ার শেয়ারের দাম সব সময়ই ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেতা ও হারার সম্ভাবনার সঙ্গে ওঠানামা করেছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ছে এবং তাঁর জেতার সম্ভাবনাও কমছে। সেই সঙ্গে উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার বিক্রির সময় ঘনিয়ে আসছে। ফলে শেয়ারের দাম আরও পড়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডলে ট্রাম্পের বিশেষ সাক্ষাৎকারের আয়োজন করা হয়। এক্সে সরাসরি সম্প্রচার করা হয় এই সাক্ষাৎকার। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্বয়ং এক্সের মালিক ইলন মাস্ক। এরপর ট্রাম্প প্রায় এক বছর পর এক্সে পোস্ট দিতে শুরু করেন।
এদিকে জনপ্রিয়তার মানদণ্ডে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আরও পেছনে ফেলে দিয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। ওয়াশিংটন পোস্ট-এবিসি নিউজ-ইপসোসের জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট পদে আমেরিকার ৪৯ শতাংশ ভোটদাতার পছন্দ বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রতি ৪৫ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছেন।
এর আগে জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে রয়টার্স-ইপসোসের জনমত সমীক্ষায় ৪৪ শতাংশ ভোটদাতা প্রেসিডেন্ট পদে কমলাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন ৪২ শতাংশ ভোটার। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রার্থীর ব্যবধান ২ থেকে বেড়ে ৪ শতাংশ হয়েছে।
এ অবস্থায় যে ট্রাম্পের কোম্পানির শেয়ারের দাম কমছে, তা স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।