“যুক্তরাষ্ট্রের মানবসেবার উদ্যোগের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতিগত পারিবারিক শিক্ষাকে এতাত্ম করেছি” ~ ভূষিত হলেন আজীবন সম্মাননা ও সিনেটারিয়েল অ্যাওয়ার্ডেও॥
নারীর ক্ষমতায়ণ ও মানব সেবায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের দি প্রেসিডেন্ট ভলেন্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন নিউইয়র্কের হোম কেয়ার সেবার পথিকৃৎ আবু জাফর মাহমুদ। প্রেসিডেন্টশিয়াল গোল্ড মেডেলের পাশাপাশি তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট কার্যালয় ও অ্যামেরিক্রপস্ এর আজীবন সম্মাননা সনদ এবং সিনেটারিয়াল মেডেল পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় ওয়ান থাউজেন্ড শেডস অব উইমেন ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাকে ওই পদক ও সম্মাননা দেয়া হয়। নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ১ নং সেক্টরের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমাণ্ডার এবং বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের প্রেসিডেণ্ট এণ্ড সিইও আবু জাফর মাহমুদের হাতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাক্ষরিত সম্মাননা সার্টিফিকেট ও ব্যাজ তুলে দেন ওয়ান থাউজেন্ট শেডস অব উইমেন ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট ডাইওর ফল। তিনি বলেন, আবু জাফর মাহমুদ মানব সেবায় শুধু বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্যই অসামান্য নিদর্শন গড়েননি, তার বহুমুখি সেবামুলক কর্মকাণ্ডে আমেরিকায় বসবাসকারী বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। মানব সেবায় আর ঔদার্য ও পরীক্ষিত পদক্ষেপগুলো এখন মার্কিন সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখছে।
হাই লেভেল ইভেন্ট’ এ আইভরি কোস্টের নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রী নাসেনেবা চেরি ডিয়ানসহ আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, ইউনিসেফসহ জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন। আরো যারা অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন অভিবাসী অধিকার কর্মী আদামা বাহ্, কাস্টমার কেয়ার এনালিস্ট প্রিডেন্স পায়েজ, চীনের প্রখ্যাত শিল্পী, সুরকার ও শিক্ষানুরাগী কারিনা হো, আমেরিকায় নিযুক্ত গ্রেনাডার রাষ্ট্রদূত ড. ডেনিস জি অ্যান্টনি, স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞ সুমাইয়া আব্দুল লতিফ, প্রজেক্ট পিস লাইটস এর প্রতিষ্ঠাতা পেটে রগিনা, খান টিউটোরিয়ালের প্রেসিডেন্ট এণ্ড সিইও মো. ইভান খান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মানব সেবায় কৃতি ব্যক্তিত্ব যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট রাজনীতিক আবু জাফর মাহমুদ তার ‘জয় বাংলাদেশ ও জয় আমেরিকা’ শ্লোগান উচ্চারণ করেন। সে সঙ্গে তিনি ওয়ান থাইজেন্ট শেডস অবস উইমেন ইন্টারন্যাশনালের প্রতি একান্ত শুভাশীষ জানিয়ে বলেন, নারীর ক্ষমতায়ণ ও সমাজ অগ্রগতির জন্য সারা পৃথিবীতে যারা কাজ করছেন, তাদেরকে সম্মাণিত করার এই আয়োজন দৃষ্টান্তমূলক। তিনি এই আয়োজনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মানবসেবার যতগুলি অনন্যতা তার একটি হচ্ছে হোম কেয়ার সেবা। মার্কিন সরকার তথা মার্কিন জাতির মানবিক উদারতা ও মহানুভবতার সঙ্গে মিল রয়েছে বাংলাদেশের জীবন ও সংস্কৃতির। বিশেষ করে বাংলাদেশি পরিবার পর্যায়ে সেবা মানেই ভালোবাসা, আত্মিক টান ও গভীর মমত্ববোধ। সেবা মানেই দায়বদ্ধতা ও গভীর জীবনোপলব্ধির ব্যাপার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেবাভিত্তিক এই অভিযানকে বাংলাদেশের পারিবারিক সাংস্কৃতিক মানবিকতার সঙ্গে একাত্ম করার চেষ্টা করে চলেছি। এখন থেকে ষোলো বছর আগে শুরু করেছি এই কার্যক্রম। মার্কিন সরকারের হোম কেয়ার সেবা বাংলাদেশি আমেরিকানদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার প্রথম উদ্যোগ নিয়েছি। আজ বাংলাদেশি আমেরিকান সমাজের মা বাবা, ভাইবোন তথা সন্তানেরা মানবসেবার ধারনা পাচ্ছেন। মানব সেবার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। এটি আমার কাছে অনেক বড় গর্বের।
অ্যাওয়ার্ড ও সম্মাননা গ্রহণের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আবু জাফর মাহমুদ প্রতিটি মানুষের জীবনে মায়ের অবদান ও গুরুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, একটি শিশুর ভ্রুণ থেকে শুরু করে জন্ম ও লালন পালনের সঙ্গে মায়ের যে গভীর সম্পর্ক ও সম্মিলন, তার সঙ্গে কারো তুলনা নেই। তিনি বলেন, প্রতিটি নারীই একেকজন মা। মায়ের প্রতীক। তাদের ভেতর মাতৃত্ব ও মমত্ব সমানে অবস্থান করেন। প্রকৃতিই তাদেরকে অসাধারণ এক সেবার শক্তি দিয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি, নারীর এই বিশেষত্বকে কাজে লাগাতে। তাদের যথাযথ মর্যাদা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে। এক্ষেত্রে আমার কাছে জাতিধর্ম গোত্রের কোনো বিভেদ ও ব্যবধান নেই। তাই থাউজেন্ট শেডস অব উইমেন আজ আমাকে যে সম্মান দিয়েছে, সে সম্মান আমি মানবসেবায় যুক্ত প্রতিটি নারীকে উৎসর্গ করতে চাই।