মঙ্গলবার (৪ জুন) দিনভর ভোট গণনার শেষে ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সুস্পষ্টভাবে বিজয়ী হয়েছে বলে দাবি করলেন ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এদিন রাতে দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে দলের নেতা-কর্মীদের সামনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “বিজয়ের এই মুহূর্তে আমি দেশের জনতাকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গেই ধন্যবাদ জানাই এনডিএ-র সব সঙ্গীকে।”
নরেন্দ্র মোদির এই দাবির ভিত্তি হলো, বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ দেশের মোট ৫৪৩টি লোকসভা আসনের মধ্যে অন্তত ২৯২টিতে হয় জিতেছে বা এগিয়ে আছে। অন্যদিকে, বিরোধী শিবিরের প্রধান জোট ইন্ডিয়া পেতে চলেছে ২৩২টির মতো আসন।
সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় গরিষ্ঠতা পেতে হলে অন্তত ২৭২টি আসনে জেতা জরুরি – এনডিএ সেই ‘ম্যাজিক সংখ্যা’ অতিক্রম করে গেছে বলেই নরেন্দ্র মোদি দাবি করছেন তারা ‘পরপর তৃতীয়বার জনগণের আশীর্বাদ’ পেয়েছেন এবং সরকার গড়তে যাচ্ছেন।
তবে এখানে একটি বড় জটিলতা আছে। এনডিএ-র ২৯২টি আসনের মধ্যে বিজেপি এককভাবে পেতে চলেছে ২৪০টির মতো আসন– অর্থাৎ আলাদা দল হিসেবে তাদের আসন গরিষ্ঠতার চেয়ে প্রায় ৩০-৩২টি কম হতে যাচ্ছে।
সুতরাং সরকার গড়ার জন্য বিজেপির জোটসঙ্গীদের সমর্থন প্রয়োজন হবে– আর ঠিক এখানেই চন্দ্রবাবু নাইডুর নেতৃত্বাধীন তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) বা নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডিইউ) ভূমিকা খুব বড় হয়ে উঠতে পারে।
ভোটের আগে বিজেপির সঙ্গে নির্বাচনি আঁতাত ও আসন সমঝোতা করলেও টিডিপি বা জেডিইউ যে ভোটের পরেও তাদের সঙ্গেই থাকবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। বা তাদের একসঙ্গে থাকার কোনও বাধ্যবাধকতাও নেই।
এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েই এনডিএ-কে ভাঙিয়ে সরকার গড়ার পাল্টা চেষ্টা চালাতে পারে ‘ইন্ডিয়া’ জোটও। বস্তুত এদিন বিকেলে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস সেই সম্ভাবনার কথা নাকচও করেনি।
আগামীকাল (বুধবার) দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠকে বসছেন বলেও স্থির হয়েছে।
ফলে ভোটগণনা শুরু হওয়ার পর প্রায় চোদ্দ-পনেরো ঘণ্টা অতিক্রান্ত হলে দেশের সবগুলো লোকসভা আসনে ফলাফলের ট্রেন্ড হয়তো জানা হয়ে গেছে– কিন্তু শেষ পর্যন্ত কারা সরকার গড়বে সেই প্রশ্নটার উত্তর অনেক ‘যদি’ ও ‘কিন্তু’র ওপর নির্ভর করছে।