জয় বাংলাদেশ: প্রথা অনুযায়ী, পাকিস্তানের ওপর দিয়ে যখনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী যাতায়াত করেন, তখন পাকিস্তানের উদ্দেশে একটি শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়ে থাকেন তিনি। এ নিয়ম সবসময় মেনে চলে আসছেন এ যাবৎকালের ভারতের সব সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তবে নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে আলোচনার জন্ম দিলেন এবার নরেন্দ্র মোদি।
পোল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফেরার পথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অপ্রত্যাশিতভাবে পাকিস্তানের আকাশসীমার ওপর দিয়ে ৪৬ মিনিট ভ্রমণ করেছেন। প্রথা অনুযায়ী পাকিস্তানের জনগণের উদ্দেশে শুভেচ্ছাবাণী না দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন নরেন্দ্র মোদি—এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা। রোববার এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন।
পাকিস্তানের ওপর দিয়ে যখনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী যাতায়াত করেন, তখন প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী পাকিস্তানের উদ্দেশে একটি শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়ে থাকেন তিনি।
এবার মোদি সে ধরনের কোনো বার্তা না পাঠানোয় দুই দেশের সম্পর্কের টানাপড়েন আরও বাড়বে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
পাকিস্তানের বেসামরিক বিমানচলাচল খাতের এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র ডনকে জানান, এ ধরনের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠানোর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এটি শুধুই দীর্ঘদিন ধরে চলমান একটি প্রথা। ‘এ ছাড়া, এ মুহূর্তে এরকম কোনো বার্তা পাঠালে ভারতে অবতরণ করার পরপরই সমালোচকদের তোপের মুখে পড়তেন মোদি’, যোগ করেন তিনি।
কয়েকটি পাকিস্তানি গণমাধ্যমে দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সূত্রের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, ভারতীয় উড়োজাহাজটি পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে চিত্রল শহরের ওপর দিয়ে প্রবেশ করে ইসলামাবাদ ও লাহোরের ওপর দিয়ে উড়ে অবশেষে ভারতের অমৃতসরের দিকে যায়।
বেসামরিক বিমান চলাচল খাতের সূত্র জানান, পাকিস্তানের আকাশসীমা ভারতের বাণিজ্যিক উড়োজাহাজের জন্য সব সময়ই উন্মুক্ত থাকে।
সূত্রটি জানান, ‘(ভারতের) প্রধানমন্ত্রীর উড়োজাহাজের (পাকিস্তানের ওপর দিয়ে) উড়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ কোনো অনুমতির প্রয়োজন নেই। তবে কখনো কখনো প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজকে বিশেষ কল সাইন (উড্ডয়ন খাতে ব্যবহৃত বিশেষ তকমা) দেওয়া হইয়, যেমন পাকিস্তানের সরকার প্রধানদের ‘পাকিস্তান ১’ ধরনের কল সাইন দেওয়া হয়।’
২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা বন্ধ করেছিল। ভারতের যুদ্ধবিমান তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘনের পর এই ব্যবস্থা নেয় দেশটি। পরবর্তীতে মার্চে আংশিকভাবে আকাশসীমা খুলে দেওয়া হলেও ভারত থেকে আসা ফ্লাইটের জন্য তা নিষিদ্ধ ছিল।
তবে একই বছর কাশ্মীর নিয়ে বিতর্কে উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী মোদির পাকিস্তানের ওপর দিয়ে জার্মানি যেতে দেওয়ার অনুরোধ নাকচ করে দেয়। দুই বছর পর অবশ্য পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার অনুমতি পান মোদি।