পাকিস্তানে ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সাধারণ নির্বাচনে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ পিটিআই ‘ক্রিকেট ব্যাট’ প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে না। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট শনিবার এই রায় দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান এএফপিকে বলেন, পাকিস্তানে স্বাক্ষরতার হার কম। তাই ব্যালটে ক্রিকেট ব্যাট প্রতীক না থাকলে অনেক ভোটার সমস্যায় পড়বেন। বিশ্বব্যাংকের হিসেবে পাকিস্তানে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে স্বাক্ষরতার হার ৫৮ শতাংশ।
নির্বাচনি আইন মেনে দলের মধ্যে নির্বাচন না করার অভিযোগে দেশটির নির্বাচন কমিশন গতমাসে ক্রিকেট ব্যাট প্রতীক ব্যবহারে পিটিআই-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। সুপ্রিম কোর্ট শনিবার এই নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে।
পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি কাজী ফায়েজ ইসা বলেন, ২০২১ সালে পিটিআই যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তাদেরকে নির্বাচন করার আহ্বান জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। ‘সে কারণে বলা যাবে না যে, নির্বাচন কমিশন পিটিআই-এর বিরুদ্ধে লেগেছে।’
পিটিআই-এর মুখপাত্র জুলফি বুখারি সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘গণতন্ত্রের জন্য দুঃখজনক দিন’ বলে আখ্যায়িত করেছন। পিটিআই-এর সব প্রার্থীকে এখন আলাদা প্রতীক বেছে নিতে হবে।
সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পর ২০২২ সালের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হন বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে।
ইমরান খানের দলের অভিযোগ, সামরিক বাহিনী তাদের নির্বাচনের বাইরে রাখার চেষ্টা করছে। তবে সেনাবাহিনী এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, পিটিআই-এর বিরুদ্ধে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করায় নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। এদিকে সামরিক বাহিনীর সমর্থন পাওয়ায় তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এবার প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে এগিয়ে আছেন।
স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে পাকিস্তানে ফেরার পর শরিফ তার বিরুদ্ধে থাকা বিভিন্ন দুর্নীতির মামলা থেকে রেহাই পেয়েছেন। সামরিক বাহিনী যে তাকে সমর্থন করছে, এটি তার লক্ষণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন বলেছ, নির্বাচনের আগেই ‘প্রাক-নির্বাচন কারচুপি’ দেখা যাচ্ছে। ফলে ইমরান খান ও তার দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে ছিটকে পড়ছে।