জয় বাংলাদেশ: রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ব্যাংক থেকে যে কোনো পরিমাণ টাকা তুললেই জানানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অপরাধমূলক কাজ সংঘটন ঠেকাতে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সব ব্যাংকের প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কর্মকর্তাকে ডেকে নিয়ে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গেল সপ্তাহে সব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের নিয়ে ঐ বৈঠক হয়েছে।
জানা গেছে, বিগত সরকারের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা বা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন এমন ব্যক্তিদের অনেকেই সশরীরে উপস্থিত না হয়ে অন্যদের মাধ্যমে চেক নগদায়নের জন্য ব্যাংকে পাঠাচ্ছেন। কেউ কেউ টাকা তুলতে চেষ্টা করছেন। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে ফোন করে এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকে দিকনির্দেশনা চাওয়া হচ্ছে। এরকম অবস্থায় সন্দেহজনক হলে চেক ফেরত দিতে বলা হয়। এসব বিষয়ে সামগ্রিকভাবে একটি নির্দেশনা দিতে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে বিএফআইইউ।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে তারা নগদ টাকা উত্তোলন তদারকি করছেন। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে তারা লেনদেনের ক্ষেত্রে নানা নিয়ন্ত্রণ এনেছেন। এর অন্যতম কারণ, এটিএম বুথে টাকা ঢোকাতে রাজি হচ্ছে না সিকিউরিটি কোম্পানিগুলো। আবার এক শাখা থেকে আরেক শাখায় টাকা নিতে চাচ্ছে না। এ অবস্থায় গ্রাহকরা সব এটিএম বুথে টাকা পাচ্ছেন না। আবার যেসব বুথে টাকা আছে, সেখানে লেনদেন সীমা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাসাবাড়ির নিরাপত্তা বিবেচনায় অনেকেই শাখায় টাকা জমা দিচ্ছেন। অনেকেই বড় অঙ্কের টাকা দেওয়ার জন্য টেলিফোন করে জানতে চাচ্ছেন। অচিরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে তারা আশা করছেন।
বৈঠকে বলা হয়, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অনেক প্রতিষ্ঠান বেনামি ঋণ নিয়েছে। এই মুহূর্তে বেনামি কোনো ঋণের টাকা ছাড় করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে মঙ্গল ও বুধবার ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠানের ৮৪৮ কোটি টাকার বেনামি ঋণ বের করে নেওয়ার চেষ্টার বিষয়টি আলোচনায় আসে। যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো ঋণের অর্থ যেন ছাড় না করা হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ে প্রতিটি ব্যাংকের বেনামি ঋণের আসল সুবিধাভোগীর তথ্য জানাতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দিয়েছে, এ সময়ে নগদ টাকা নিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে খাটাতে পারে। এ ক্ষেত্রে ভেঙে ভেঙে একাধিক শাখা থেকে টাকা তুললে তা বোঝার উপায় থাকবে না। এ কারণে টাকা উত্তোলনের সঙ্গে সন্দেহজনক প্রবণতার বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয়ভাবে তদারকি করতে হবে।