Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeস্বদেশ সংবাদপ্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় একজন পাইলট নিহত

প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় একজন পাইলট নিহত

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীতে বিধ্বস্ত বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটিতে আগুন ধরে যাওয়ার পর বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে দুই বৈমানিক অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে বিমানটিকে বিমানবন্দরের কাছে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে সরিয়ে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিমানবাহিনীর একটি ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে আজ সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে চট্টগ্রামের বিমানবাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক থেকে উড্ডয়নের পর প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। দুর্ঘটনার পর বৈমানিক উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খান ও স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ জরুরি প্যারাসুট দিয়ে বিমান থেকে নদীতে অবতরণ করেন। দুই বৈমানিককে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল এবং স্থানীয় জেলেদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উদ্ধার করা হয়। বৈমানিকদের মধ্যে স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য বিএনএস পতেঙ্গাতে নেওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর মোহনায় বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। এতে দুইজন পাইলট ছিলেন। বিধ্বস্ত বিমানটি ইয়াকোভলেভ ইয়াক-১৩০ মডেলের।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীতে বিধ্বস্ত বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানের হতাহতের ঘটনায় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নানের নির্দেশে দুর্ঘটনার কারণ উদ্‌ঘাটনে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। দুর্ঘটনায় পতিত বিমানটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

আইএসপিআর জানায়, নিহত স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ ১৯৯২ সালের ২০ মার্চ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার গোপালপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মো. আমান উল্লাহ এবং মায়ের নাম নিলুফা আক্তার খানম। আসিম জাওয়াদ ২০০৭ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০৯ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০১২ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে বিএসসি (অ্যারো) পাস করেন। তিনি ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার পান এবং জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন।

চাকরিকালে তিনি বিমানবাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ও ইউনিটে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি পেশাদারি দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ মফিজ ট্রফি, বিমানবাহিনী প্রধান ট্রফি ও বিমানবাহিনী প্রধানের প্রশংসাপত্র লাভ করেন। এ ছাড়া ভারতীয় বিমানবাহিনীতে কোর্সে অংশগ্রহণ করে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ চিফ অব এয়ারস্টাফস ট্রফি ফর বেস্ট ইন ফ্লাইং (ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স অর্জন করেন। তিনি চাকরিকালে দেশে-বিদেশে পেশাগত বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে তা সম্পন্ন করেন।

তার বয়স হয়েছিল ৩২ বছর ১ মাস ২০ দিন। তিনি স্ত্রী, এক কন্যা, এক পুত্র, মা–বাবা রেখে গেছেন বলে আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments