Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeআন্তর্জাতিকবাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ঝাড়খন্ডের জনবিন্যাস পাল্টাচ্ছে: নরেন্দ্র মোদি

বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ঝাড়খন্ডের জনবিন্যাস পাল্টাচ্ছে: নরেন্দ্র মোদি

জয় বাংলাদেশ : পূর্ব ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে অন্যতম বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ’। গত কয়েক দিনে প্রচারে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ নিয়ে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা। ঝাড়খন্ডে নির্বাচনের দিন এখনো ঘোষণা করা হয়নি, তবে বছর শেষ হওয়ার আগেই সেখানে নির্বাচন হওয়ার কথা।

সেপ্টেম্বর মাস থেকে এখন পর্যন্ত নিয়মিত বিজেপির নেতারা বলে চলেছেন, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীরা ঝাড়খন্ডে ঢুকে সেখানকার জনবিন্যাস পাল্টে দিচ্ছে। রাজ্যের আদিবাসীরা জমি হারাচ্ছেন এবং সেই জমি ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে বাংলাদেশিদের হাতে। এত দিন মনে করা হচ্ছিল, শুধু ছোটখাটো নেতারাই এ ধরনের মন্তব্য করছেন, কিন্তু গত পরশু (২ অক্টোবর) এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং।

হাজারীবাগে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘জনবিন্যাসে এত দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আদিবাসী এবং হিন্দু জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়া নিয়ে আমার প্রশ্ন যে এই পরিবর্তন আপনাদের চোখে পড়ছে না? বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে না বাড়েনি?’

এরপর এই প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদি আক্রমণ করেন রাজ্যে ক্ষমতাসীন হেমন্ত সরেন ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার সরকারকে। এই সরকারের জোট শরিক কংগ্রেসকেও আক্রমণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা ক্ষমতার জন্য খাড়খন্ডকে শেষ করে দিতে চায়। এই ভয়ানক ক্ষমতার খেলার উদাহরণ সাঁওতাল পরগনা। সেখানে আদিবাসী জনগোষ্ঠী কমছে, আর বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বাড়ছে। আপনারা কি ঝাড়খন্ডের জনবিন্যাসে এই পরিবর্তন এবং হিন্দু ও আদিবাসী জনসংখ্যা কমে যাওয়াটা মেনে নেবেন?’

অভিযোগ করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘অনুপ্রবেশকারীরা এখানকার জমি জবরদখল করছে। আপনারা সবাই এই বিপদ দেখতে পাচ্ছেন কিন্তু ঝাড়খন্ডের সরকার দেখতে পাচ্ছে না।’ দুর্নীতির অভিযোগে ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনকে ২০২৪ সালের গোড়ায় গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তিনি জুলাই মাসে জামিনে মুক্তি পান। এই ঘটনা ঝাড়খন্ডের আদিবাসী সমাজকে অসন্তুষ্ট করেছে বলে রাজ্যের কিছু পত্রিকা জানিয়েছে।

নরেন্দ্র মোদির এই বক্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৃহস্পতিবার এবারের নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির প্রধান মুখ আদিবাসী নেতা চম্পাই সরেন বলেন, ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের’ অবিলম্বে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।

ঝাড়খন্ডের পাকুর জেলায় এক গণসমাবেশে বক্তৃতার সময় চম্পাই বলেন, ‘আমরা কোনো অনুপ্রবেশকারীকে আমাদের জমিতে বসবাস করতে দেব না, যেখানে আমাদের পূর্বপুরুষেরা জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁদের সম্পত্তি ও আত্মসম্মানের জন্য ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। আমরা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়ে দেব এবং আমাদের জমি ফিরিয়ে নেব।’

ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন গত জানুয়ারি মাসে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর দল ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার জ্যেষ্ঠ নেতা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী হন চম্পাই। কিন্তু হেমন্তের মুক্তির পর তিনি দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে এখন মনে করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী এবং ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত মাসে বলেছিলেন, হেমন্ত সরেনসহ শীর্ষ বিরোধী নেতৃত্ব বাংলাদেশিদের ভারতে আসতে সাহায্য করছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনুপ্রবেশকারীরা হলো লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি (রাষ্ট্রীয় জনতা দল), রাহুল বাবার (রাহুল গান্ধী) কংগ্রেস এবং মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার ভোট ব্যাংক। আমি অবৈধ অভিবাসীদের তাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। সময় এসেছে দুর্নীতিগ্রস্ত ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চাকে বিদায় নেওয়ার দরজা দেখানোর…আমরা ঝাড়খন্ডে পরিবর্তন আনতে চাই।’

একই সঙ্গে অমিত শাহ বলেন, ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের’ উল্টো করে ঝুলিয়ে তাদের মোকাবিলা করা হবে। তিনি জানতে চান, ঝাড়খন্ডের ‘এই জমি আদিবাসীদের, রোহিঙ্গা নাকি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের? মনে রাখবেন, ঝাড়খন্ডকে কেউ বাঁচাতে পারবে না, জেএমএম বা কংগ্রেসও নয়। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই এটিকে বাঁচাতে পারেন।’

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের উপহাইকমিশনারকে ডেকে পাঠায় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানায়।

 

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments