Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeনিউইয়র্ক নিউজবাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন বাকা’র নৌবিহারে স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ

বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন বাকা’র নৌবিহারে স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ

২০২৩ সালেই ‘জয় বাংলাদেশ’ শ্লোগান
বাংলাদেশের আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হবে

নিউইয়র্কের বৃহত্তম সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন বাকা’র নৌবিহার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৮শে আগষ্ট সোমবার কুইন্সের ওয়ার্ল্ড ফেয়ার মেরিনা থেকে চার শতাধির যাত্রীর ওই নৌবহর হাটসন নদীর উপর দিয়ে ম্যানহাটন ও ব্রুকলিনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো ঘুরে আবার ওয়ার্ল্ড ফেয়ার মেরিনায় শেষ হয়। দুপুরে নৌবিহারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর, বীর মুক্তিযুদ্ধা স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে আমরা গোটা জাতিকে একত্রিত করেছিলাম। য্দ্ধু করে স্বাধীন রাষ্ট্র জন্ম দিয়েছি। বহু বীরের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে এসেছে স্বাধীনতা। আজ স্বাধীন জাতির শ্লোগান কেন ‘জয় বাংলাদেশ’ হবে না। তিনি বলেন, যেকোনো মূল্যেই এটি হতে হবে। জাতিসত্তার শক্তি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এই শ্লোগানের কোনো বিকল্প নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই ২০২৩ সালেই ‘জয় বাংলাদেশ’ শ্লোগান বাংলাদেশের আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হবে। আমি বিশ্বাস করি, যে বিভক্তির রাজনীতি ছড়ানো হয়েছে, সেখান থেকে আমরা ফিরে আসবো। আমরা একতায় ফিরবো। আমি একতার জন্য কাজ করছি।

বাকা’র সহ সভাপতি মোহাম্মদ সাদি মিন্টুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কবি শাহ বদরুজ্জামান রুহেলের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, বিশিষ্ট সমাজকর্মী আলমাস আলী, কবি জুলি রহমান, মৌলভীবাজার ইউনাইটেড সোসাইটি অব নিউজার্সির আহবায়ক গোলাম ইস্পাহানী চৌধুরী মাছুম, বিশিষ্ট সমাজকর্মী রিয়াজ উদ্দিন কামরান, মোমেনুল ইসলাম, সারওয়ার আলী ও কুলাঊড়া সমিতি নিউজার্সির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোদাব্বির চৌধুরী সুলেমান। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি আব্দুল হাসিম হাসনু, প্রাক্তন সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন, সংগঠনের কার্যকরী কমিটির সদস্য জে মোল্লা সানি, নৌবিহার পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব শাহ কামাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি সাংবাদিক সৈয়দ ইলিয়াস খছরু, মাকসুদা আহমদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ। অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক সহিদুল ইসলাম ভূইয়াঁ, প্রচার ও গণ-সংযোগ সম্পাদক লিয়াকত আলী, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রায়হান জামান রানা, আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক আব্দুর রহমান দুলাল, ক্রীড়া ও বিনোদন সম্পাদক আশরাফ হোসেন টিটু, সদস্য চৌধুরী মুমিত তানিম ।
গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশের নতুন প্রজন্ম বিভ্রান্ত হচ্ছে। তারা সঠিক শিক্ষাটি পাচ্ছে না। তাদের সামনে কোনো রোল মডেল নেই। অনুসরণ করার মতো কোনো মানুষ নেই। তারা যাদের অনুসরণ করবে, তারাই একে অন্যের সঙ্গে বিভক্তি তৈরি করে। প্রতিপক্ষকে হত্যা করে। টেলিভিশনে প্রতিপক্ষকে গালমন্দ করে। আমাদের প্রজন্মের সভ্যতা শেখার কোনো জায়গা নেই। তিনি নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা কাউকে অনুসরণ করবে না। তোমরা দেশের মর্যাদা রক্ষা করবে নিজেদের আচরণ দিয়ে।

তিনি বলেন, যুদ্ধ করে যে দেশটি জন্ম দিলাম, সেই দেশ আর তার রাজধানীতে মানুষ বসবাস করা কতটা কঠিন তা সরেজমিনে দেখে এলাম। সেখানে খাবার দাবার বিষাক্ত। পানি অনিরাপদ। মানুষ যে শ্বাসপ্রশ্বাস গ্রহণ করে তা বিষাক্ত। নিজের ওপর বিরক্ত হতে হয়। মানুষ হিসেবে জন্ম নিয়ে এই যে বেঁচে আছি, আল্লাহর কাছে কী জবাব দিব? সেখানকার মানুষগুলো শুধু বেঁচে আছে আল্লাহর রহমতে। স্বাভাবিক জীবন যাপনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এই অবস্থা থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করতে হবে। এটিই আজকের দিনের সবচেয়ে জরুরি কাজ।

তিনি নৌবিহারের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে চলেন, আমি অত্যন্ত স্পন্দিত, আনন্দিত। পানির ওপরে জাহাজে যেন আলাদা এক বাংলাদেশ রচিত হয়েছে। বাংলাদেশি পরিবারগুলোই আমাদের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের প্রতিনিধিত্ব করে। পোশাকে, চলাফেরায় তারা যথেষ্ট পরিশীলিত ও মার্জিত। অন্য জাতিগোষ্ঠি থেকে এখানেই আমাদের ভিন্নতা। আমাদের এই জাতিগত ভিন্নতা ও শক্তির জায়গাটি একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা ও মমত্ববোধ। এই শক্তি নিয়েই আমি নিউইয়র্কে বাঙালি সমাজে হোম কেয়ার শুরু করেছিলাম। এটি আমেরিকানদের কাছে ব্যবসা। কিন্তু আমার কাছে এটি ভালোবাসা আর সেবা। আমি জন্মেই দেখেছি, আমাদের পরিবারগুলো সুরক্ষিত থাকে ভালোবাসা আর সেবার বন্ধনে।
স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ ভিয়েতনাম থেকে নাইট অফ সেন্ট জন অফ জেরুজালেম উপাধি গ্রহণ শেষে বাংলাদেশের সিলেট সফরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, হযরত শাহজালাল (র.)সহ ৩৬০ জন আউলিয়ার পূণ্যভূমির মানুষের মধ্যে যে ভালোবাসা, মর্যাদা, আতিথেয়তা রয়েছে তা বর্ণনাতীত। তিনি বলেন, আমার মনে হয়েছে কয়েকশত বছর আগে কবি শেখ সাদী যেভাবে অতিথির বাড়িতে আপ্যায়িত হয়েছিলেন, আমি সেভাবে আপ্যায়িত হয়েছি। আমার মনে হয়েছে, আউলিয়ারা ওই ভূমিতে প্রেম শিখিয়েছেন, দরদ শিখিয়েছেন, মায়া শিখিয়েছেন। এই মানবিক গুণাবলীর জায়গা থেকেই মানুষ ইসলাম ধর্মের প্রতি অনুরক্ত হয়েছেন।

অনুষ্ঠানে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাউল কালা মিয়া ও রোজি আজাদ। অনুষ্ঠানে র‌্যাফেল ড্র পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে বাকা’র সভাপতি আব্দুল হাসিম হাসনু এই ব্যয় বহুল নৌবিহার আয়োজনে সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments