জয় বাংলাদেশ: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিকভাবে লাইসেন্স পাওয়া তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্মের কিছু ব্যাংক মৃতপ্রায় হয়ে আছে। এদের চলনশক্তি নেই। এদের জনগণের করের টাকা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। এরা মরে যাক। এতে শুধু অর্থের অপচয় হচ্ছে। বন্ধ হয়ে যাক এসব ব্যাংক।
এ ছাড়া কিছু ব্যাংকের পারফরম্যান্স খারাপ, আরেকটু ধাক্কা লাগলেই মরে যাবে। এগুলোর পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন করে পরিচালনার চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আজ সোমবার দুপুরে ঢাকার ধানমন্ডিতে সংস্থাটির কার্যালয়ে ‘ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা আনা, শিগগির কী করতে হবে’ শীর্ষক পর্যালোচনা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তুলে ধরে। এ সময় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এসব কথা বলেন।
সিপিডি বলেছে, পুরো ব্যাংক খাত চলে গেছে নিয়মনীতির বাইরে। এত দিন বিশেষ ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর প্রসারে কাজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক দশকের বেশি সময় ব্যাংক খাতে ২৪টি বড় ধরনের কেলেঙ্কারি হয়েছে। এসব কেলেঙ্কারির পরিমাণ ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা।
অন্যদের মধ্যে সংস্থাটির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান এবং গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বক্তব্য দেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়।
ব্যাংক খাতের সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধান করতে ব্যাংক কমিশন গঠন করার সুপারিশ করেছে সিপিডি। আরও বলেছে, ব্যাংক খাতে দ্বৈত প্রশাসন চলছে। বন্ধ করে দেওয়া উচিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এ ছাড়া কোনো ধরনের বিবেচনা ছাড়া লাইসেন্স দেওয়ার সংস্কৃতিও বন্ধ করতে হবে।
সিপিডি বলেছে, চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের হাতেই সাতটি ব্যাংক। এস আলম গ্রুপ একাই ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। একসময় ইসলামী ব্যাংক ভালো ব্যাংক ছিল। দখলের পর তা–ও মুমূর্ষু হয়ে গেছে। এ ছাড়া একক গ্রাহকের জন্য ঋণসীমা নীতি লঙ্ঘন করে জনতা ব্যাংক এননট্যাক্স গ্রুপকে দিয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। এভাবে একক গোষ্ঠী যদি এত বেশি পায়, অন্য গ্রাহকেরা কী পাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা নিয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, এমন না যে তাদের স্বাধীনতা নেই; তারা এটা ব্যবহার করছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক বরং বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থের কথা চিন্তা করে নীতিমালা করেছে। দুই বছর ধরে দেশের মানুষ উচ্চ মূল্যস্ফীতির কবলে। দরকার ছিল সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেওয়া। কিন্তু বিশেষ ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর যাতে সুবিধা হয়, সে জন্য সুদহার বাড়ায়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ হয়ে গেলে বিভাগটির আওতায় থাকা ব্যাংক ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর পর্ষদ নিয়োগ দেওয়াসহ অন্যান্য কাজ তাহলে কে করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে ফাহমিদা খাতুন বলেন, অর্থ বিভাগ করবে।