পারিবারিক বন্ধনই আমাদের আনন্দ, গর্ব ও শিক্ষার উৎস
বাংলা ক্লাব ইউএসএ ইনক্ এর বার্ষিক বনভোজন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রোববার নিউইয়র্কের জর্জ আইল্যান্ড পার্ক -এ ওই বনভোজন এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ। তিনি ব্যস্ততম জীবনে একটু স্বস্তির জন্য অসাধারণ প্রাকৃতিক পরিবেশে বনভোজন আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, একে অন্যের সঙ্গে পারিবারিক বন্ধন রচনার ক্ষেত্রে এ ধরণের আয়োজন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে থাকে। আমরা বাংলাদেশিরা পারিবারিক শিক্ষার মধ্যেই সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাই। সবাই একত্রিত হওয়ার বিষয়টি আমাদের পারিবারিক শিক্ষা। বাংলা ক্লাবের সভাপতি আবুল কালাম পিনুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি মেম্বার আবুল হাশিম হাসনু, বাংলা ক্লাবের সহ সভাপতি মো. মমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক দোলোয়ার হোসেন চুন্নু।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি সমাজে হোম কেয়ার সেবার পথিকৃৎ স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ তার বক্তব্যে সম্প্রতি জুম্মাহর নামাজে মসজিদের একজন খতিবের হোম কেয়ার সেবা সম্পর্কিত বক্তব্যে ‘অনেক ক্ষেত্রে আমাদের মা বোনরা শশুর শাশুড়িদেরকে সঠিক সেবা প্রদান করেন না’, এমন সমালোচনা প্রসঙ্গে বলেন, সেবা, ভালোবাসা ও মমত্ব আমাদের নারীদের জন্মগত শিক্ষা। প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি সমাজ এই শিক্ষাই লালন করে আসছে। আমাদের স্ত্রী, মা, বোন ও সন্তানরা এই জাতিগত শিক্ষা নিয়েই অন্য জাতিগোষ্ঠি থেকে এগিয়ে আছে। আলাদা বৈশিষ্ট্যে উজ্জল হয়ে আছে। আমি সতের বছর ধরে হোম কেয়ার করছি। আমাদের মা বোনদের পারিবারিক শিক্ষাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আমার কাছে হোম কেয়ার ভালোবাসা ও মমত্বের সংমিশ্রণ। আমি এটিকে শুধু অর্থ উপার্জনের মাধ্যম মনে করি না। আমার কাছে এটি সার্ভিস। তারপরও কোনো মা বোন সম্পর্কে যদি নেতিবাচক কোনো অভিযোগ আসে, সেক্ষেত্রে আমি লজ্জিত হলেও বিশ্বাস হারাইনা। কারণ, আমি মনে করি, আমাদের চরিত্রের সকল গুণাবলী নিয়েই আমাদের পরিচয়। ঢালাওভাবে কোনো অভিযোগ আমাদের মা বোনদের ওপর চাপানো যাবে না। আমরা উৎসাহিত করি পারিবারিক শিক্ষা ও ভালোবাসায় উজ্জীবিত হতে। আমাদের কোনো বোন যদি অন্য কোনো জাতিগোষ্ঠি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে, সেটিও সংশোধনের অতীত নয়। প্রত্যেক মানুষই চায় তার উজ্জ¦লতম আত্মপরিচয়ে ফিরতে।
স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, হোম কেয়ার সেবা একটি অসাধারণ ব্যবস্থা। আজ যিনি পিএ’র দায়িত্ব পালন করছেন, একসময় তিনিও পেশেন্ট হিসেবে সেবা গ্রহীতা হবেন। আজ যিনি স্ত্রী, কন্যা বা পুত্রবধু কাল তিনিই মা, দাদি, নানি হিসেবে হোম কেয়ার সেবা গ্রহণ করবেন। এই সত্য ভুলে যাবার কোনো সুযোগ নেই। এই শহরে যারা হোম কেয়ার করছেন বিশ্বাস করি তারা সবাই এই ক্ষেত্রটিকে সেবার ক্ষেত্র হিসেবেই ধরে রাখবেন। সুখী থাকতে হলে সবার মুখে সমান হাসি থাকতে হবে। প্রত্যেকে মর্যাদাবান ও সম্মান সচেতন হতে হবে।
সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দিনব্যাপী মেলায় ছিল বিভিন্ন পুরুষ, নারী ও শিশুদের জন্য নানারকম খেলাধুলা ও র্যাফেল ড্র-এর আয়োজন। শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ।