প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করার। বারবার আঘাত আসার পরও এ জাতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাঙালি জাতির সব অর্জনেই এসেছে ত্যাগের মাধ্যমে।’
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে একুশে পদক-২০২৪ সম্মাননা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে চলবে, কারণ একুশ আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করা যায়। কারও কাছে হাত পেতে নয়, আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে হবে। নিজের মাতৃভাষা, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সবকিছুকেই রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। সারা পৃথিবী আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস পালন করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হারিয়ে যাওয়া মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য আমরা একটি ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি। আজকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য কয়েকজনকে আমরা একুশে পদক দিতে পেরে আনন্দিত ও গর্বিত।
এসময় দেশ ও মানুষের জন্য যারা নিবেদিত হয়ে কাজ করছে সেসব ত্যাগী মানুষদের খুঁজে বের করার জন্য সকলের প্রতি আহবানও জানান প্রধানমন্ত্রী।
পদকপ্রাপ্ত জিয়াউল হকের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দরিদ্র একজন মানুষ সমাজকে নিয়ে ভেবেছেন, কাজ করেছেন, দই বিক্রি করে পাঠাগার করেছেন। তিনি আমাকে বলেছেন- ওই পাঠাগারের স্থায়ী জমি দরকার। তার করে দেওয়া স্কুলটিও সরকারি করার জন্য বলেছেন। আমি খোঁজখবর নেব। তাদের জন্য কাজ করবো, জাতির পিতার কন্যা হিসেবে বলছি।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের সংগ্রাম গড়ে তুলেছিলেন, তার পথ বেয়ে আসছে আমাদের স্বাধিকার। দুঃখের বিষয় ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতার অবদান মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। আমরা সে সময়কার গোয়েন্দাদের প্রতিবেদন নিয়ে বই বের করেছি। সেসব গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান উঠে এসেছে। অনেকে বলেন তিনি তো জেলে ছিলেন। আসলে তিনি জেলে ছিলেন কেন? আন্দোলন গড়ে তুলেছেন বলেই তিনি জেলে ছিলেন।
এ সময় একুশের চেতনা ও আদর্শকে লালন করে বাঙালিকে আত্মমর্যাদা সমুন্নত রেখেই বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করেই চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।