জয় বাংলাদেশ: কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে দেশে গত ৩০ জুলাই পালিত হয় রাষ্ট্রীয় শোক। শোকের রঙ কালো হলেও সেদিন ফেসবুকে হাজার হাজার তরুণের প্রোফাইল পিকচার লাল করা হয়। মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও আন্দোলনকারী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ এটিকে প্রহসন উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যান করেন এবং নিজেদের প্রোফাইল পিকচার হিসেবে লাল রঙ বেছে নিয়েছিলেন।
এবার আবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে লাল প্রোফাইল পিকচার দিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত ১০টা ৫২ মিনিটে প্রেফাইল পিকচার বদলান হাসনাত। ক্যাপশনে লিখেন,
‘সাঈদ ওয়াসিম মুগ্ধ,
শেষ হয়নি যুদ্ধ।
১৩৪ শে জুলাই, ২০২৪’
এর আগে ১০ মিনিট আগে রাত ১০টা ৪২ মিনিটে আরেকটি পোস্ট দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি লিখেন, ‘বশির-ফারুকীকে উপদেষ্টা করার প্রতিবাদ সভা থেকে গ্রেপ্তার করার ঘটনা চরম ফাইজলামি। এগুলা ভণ্ডামি। আপনেরা হাসিনা হয়ে উঠার চেষ্টা কইরেন না। হাসিনারেই থোরাই কেয়ার করছি, উৎখাত করছি। আপনেরা কোন হনু হইছেন?’
এর আগে বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা চাই আপনারা দ্রুত তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। ছাত্র-নাগরিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেন, তা মেনে নেওয়া হবে না। দ্রুত এই সিদ্ধান্তের সমাধান চাই।’
হাসনাত আরও বলেন, ‘যারা ধানমন্ডি ৩২ কে কাফেলা মনে করে তাদেরকে উপদেষ্টা নিয়োগ করা হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই শিক্ষার্থীরা নিজেদের জীবন দিয়েছে। তারা বিপ্লব করেছে রাষ্ট্রের সামগ্রিক কল্যাণের জন্য। কিন্তু শিক্ষার্থীদের রক্তকে পুঁজি করে, শ্রমিকের রক্তকে পুঁজি করে, সাধারণ মানুষের রক্তকে পুঁজি করতে আপনারা যদি মনে করেন উপদেষ্টা হবেন, পদ বাগিয়ে নেবেন তাহলে আপনারা ভুল ভাবছেন।’
ছাত্র-জনতার অংশীদারত্ববিহীন সিদ্ধান্তে উপদেষ্টা নিয়োগ এবং এতে ফ্যাসিবাদী দোসরদের স্থান দিয়ে শহীদের রক্তের অবমাননার অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শুরু হয় এ কর্মসূচি। এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ছাত্র-জনতার অংশীদারিত্ববিহীন সিদ্ধান্তে উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়টি কোনো ভাবেই মেনে নেবে না ছাত্রসমাজ।
এ সময় তারা বলেন, জুলাই-আগস্টে ফেসবুকে ২/১টা পোস্ট দিয়েই উপদেষ্টা হয়ে যাচ্ছেন, কীভাবে হচ্ছে সেটি বোঝা দরকার।
উত্তরবঙ্গের কোনো জেলার কেউ উপদেষ্টা নিয়োগ না পাওয়ার সমালোচনাও করেন আন্দোলনকারীরা। অবিলম্বে এমন নিয়োগ ছাত্র সমাজ মেনে নেবে না বলেও হুঁশিয়ারি শিক্ষার্থীদের।
প্রসঙ্গত রোববার (১০ নভেম্বর) বঙ্গবভনে শপথ নিয়েছেন নতুন তিন উপদেষ্টা। তারা হলেন—ব্যবসায়ী সেখ বশিরউদ্দীন, চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।