Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeস্বদেশ সংবাদযেসব কারণে বহিস্কার হলেন বিএনপি নেতা বাচ্চু

যেসব কারণে বহিস্কার হলেন বিএনপি নেতা বাচ্চু

জয় বাংলাদেশ: ময়মনসিংহের ভালুকায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগে বিএনপি নেতা ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বহিষ্কারের পর তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে বিএনপি। মামলায় বাচ্চুসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ফখরুদ্দিন আহমেদ জেলা দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভালুকা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপি থেকে বাচ্চুর বহিস্কারের পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে।

তারা অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হুমকি দেওয়া এবং লোকজন পাঠিয়ে পেশিশক্তির মহড়া দেখিয়ে স্বার্থ হাসিল করেন। কাঠালী মৌজায় ব্র্যাকের স্বত্ব দখলীয় জমির বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে আনুমানিক দুই একর জমি দখলে নেন ফখরুদ্দিন আহমেদ।

গত ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চুর নেতৃত্বে তার গ্রুপের দলীয় সব নেতাকর্মী প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের গোলাম মোস্তফার পক্ষে নির্বাচন করেন। বাচ্চুর অনুসারী বিএনপির অঙ্গ-সংগঠনের অনেকেই বহিস্কার হন এ অভিযোগে।

২০১৫ ও ২০২০ সালের ভালুকা পৌরসভার নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন করার অভিযোগও রয়েছে বাচ্চুর বিরুদ্ধে।

২০২০ সালের ভালুকা উপজেলাধীন বাশিল মৌজায় জাল দলিল সিজন করে নিরীহ কৃষকের জমি আত্মসাত করে সেই জমির মাধ্যমে মোটা অংকের ব্যাংক লোন উত্তোলন করেন বলেও অনেকে অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে সিআইডিতে মামলা চলমান রয়েছে।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ভাওয়াল কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী ফখরুদ্দিন আহামেদ বাচ্চু আওয়ামী লীগ এমপি-মন্ত্রীদের সঙ্গে আঁতাত করে আনুমানিক পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কার্যাদেশ পেয়ে বহাল তরিয়াতে কাজ করে যান।

তাদের দাবি, বর্তমানে তার নামে বেনামে ১২শ’ কোটি টাকার কাজ চলমান আছে। ওই কাজ চলমান থাকায় কাজের বিল নিয়ে সমস্যা হতে পারে এই আশঙ্কায় গত বছরের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে তাকে বিএনপির কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে দৃশ্যমান হতে দেখা যায়নি।

তারা জানান, তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান পদপার্থী মেজর হামিদ সাহেবকে টর্চলাইট দিয়ে চান্দা বোর্ডবাজার জনসভায় মাথায় আঘাত করেন। পারুলদীয়া বাজারে কোরবানির চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গরুর চামড়া লুট করে এলাকা ছেড়ে ময়মনসিংহে পালিয়ে যান বাচ্চু। ময়মনসিংহে গিয়ে তার বোনের বাসায় থাকা শুরু করেন। সে সময় তার বিরুদ্ধে ছিনতাই, হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনারও অভিযোগ ওঠে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, প্রিন্সিপাল মতিউর রহমানকে ধর্মবাবা বানিয়ে ১৯৯৭ সালে আওয়ামী সরকারের আমলে ভাওয়াল কনস্ট্রাকশন প্রতিষ্ঠান খুলে ঠিকাদারির পাশাপাশি সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেন বাচ্চু। ২০০১-২০০৮ সালে বিএনপির নাম ব্যবহার করে ভালুকা, খিরু নদীর ব্রিজ, ময়মনসিংহ শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ থেকে বিনা টেন্ডারে টোলের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে।

এছাড়া বাচ্চুর বিরুদ্ধে প্রতিটি স্থানীয় নির্বাচনে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি এলাকায় রাজনীতিতে পরিবারের সদস্যদের বসিয়ে স্বার্থ হাসিলের অভিযোগ করেন বিএনপির নেতারা। বাচ্চুর বোন-জামাই ওসি সাইদুল গত ১৫ বছরে সূত্রাপুর, দোহার, রামপুরা এইসব থানায় ওসি থাকাকলীন অসৎ উপায়ে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলেও দাবি করেন স্থানীয় বিএনপির নেতারা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments