হিজবুল্লাহর হাইফা শহরের নজরদারি ফুটেজ প্রকাশের পর লেবানন তথা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। মঙ্গলবার (১৮ জুন) তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শিগগিরই একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের সিদ্ধান্ত আসছে। এমনকি উত্তেজনা এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাও এতে কোনো প্রভাব ফেলবে না। খবর রয়টার্সের।
লেবাননের দক্ষিণে আন্তসীমান্ত গোলাগুলি বৃদ্ধির পর উত্তেজনা কমানোর প্রচেষ্টায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমোস হোচস্টেইনকে লেবাননে পাঠানো হয়েছিল। ড্রোন ফুটেজ প্রকাশের মাধ্যমে ইসরায়েলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হাইফা আক্রমণ করার ইঙ্গিত দিয়েছিল হিজবুল্লাহ।
আট মাস ধরে গাজা যুদ্ধে সংহতি প্রকাশ করে ইসরায়েলের সঙ্গে গুলিবিনিময় করছে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ। গত সপ্তাহে ইসরায়েলি হামলায় গোষ্ঠীটির এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সিনিয়র এক কমান্ডার নিহত হন। এরপর ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনাগুলোতে সবচেয়ে বড় রকেট ও ড্রোন হামলা চালায় তারা, যা নভেম্বরে থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে করা একটি পোস্টে কাটজ বলেছেন, ‘এই খেলায় হিজবুল্লাহ ও লেবাননের বিরুদ্ধে নিয়ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার খুব কাছাকাছি চলে এসেছি আমরা।’
হাইফার বন্দরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করার বিষয়ে হিজবুল্লাহর প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লার দেওয়া হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এই কথা বলেন কাটজ। বন্দরগুলো চীনা ও ভারতীয় সংস্থাগুলো পরিচালনা করে।
এ সময় ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘একটি সর্বাত্মক যুদ্ধে হিজবুল্লাহকে ধ্বংস এবং লেবাননকে নাস্তানাবুদ করা হবে।’
এদিকে, হিজবুল্লাহ বলেছে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি না হলে হামলা বন্ধ করবে না তারা।
যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধ দেখতে চায় না বলে জানিয়েছেন পেন্টাগনের এক মুখপাত্র।
পরিস্থিতি ‘গুরুতর’ হওয়ায় ইসরায়েলে সংক্ষিপ্ত সফরের পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিশেষ দূত হোচস্টেইনকে লেবাননে পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার হোচস্টেইন বলেছিলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরা উত্তেজনা বাড়তে দেখেছি এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেন একটি বৃহত্তর যুদ্ধের আরও বৃদ্ধি এড়াতে চান।’
মঙ্গলবার লেবাননের সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন হোচস্টেইন। এ সময় পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তিনি। সশস্ত্র গোষ্ঠী আমাল আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন নাবিহ বেরি। গোষ্ঠীটি হিজবুল্লাহর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ইসরায়েলের ওপর রকেট ছুড়েছে।
লেবানন সীমান্তের এই সংঘাত আলোচনার মাধ্যমে বন্ধ করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স।