জয় বাংলাদেশ : জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘হিন্দু ভাইদের আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের লোকজন। ফ্যাসিবাদের দেশের বাইরেও অনেক দোস্ত, বন্ধু আছে। তাঁরা প্রতিবিপ্লবের ইন্ধন দিচ্ছেন।’
সোমবার বেলা ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জ শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে ইউনিয়ন সম্মেলন এবং গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারে অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘জুডিশিয়াল ক্যু করে প্রধান বিচারপতি অন্তর্বর্তী সরকার সরানোর ষড়যন্ত্র করেছিলেন। ছাত্র-জনতা বুঝতে পেরে প্রধান বিচারপতিকে তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করিয়ে দেশকে রক্ষা করেছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বসার পর নানা দাবি তোলা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন, ১৫ বছর আপনারা কোথায় ছিলেন? এত দাবি কোথায় ছিল।’
নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময় পর্যন্ত জামায়াত সময় দিতে রাজি উল্লেখ করে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। দেশ গঠনে তাঁরা আমাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। আমরা তাঁদের সহযোগিতা করতে ওয়াদা করেছি। সংস্কার করে অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে খুব শর্ট বা খুব লং যেন না হয়।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা ১৫ বছর রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসেছিল। এখনো তারা অনেক ক্ষেত্রে ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদের সবাইকে সরাতে হবে। তাই একটা নির্বাচন দিতে ন্যূনতম যতটুকু সংস্কার দরকার, তা করতে হবে।
অভ্যুত্থানে নিহতদের উদ্দেশে গোলাম পরওয়ার বলেন, স্বৈরশাসক থেকে মুক্ত হয়ে মানুষ ঈদের আনন্দ করেছেন। কিন্তু শহীদ পরিবার ঘরের কোনায় কান্নায় জর্জরিত ছিল। এ সময় শহীদের মর্যাদা তুলে ধরে কোরআন-হাদিস দিয়ে আলোচনা করেন জামায়াতের এই নেতা। তিনি বলেন, ‘শহীদদের কথা ইতিহাসে লেখা থাকবে। আমরা চলে যাব, তবে স্বৈরশাসক থেকে দেশকে মুক্ত করতে যাঁরা জীবন দিয়েছেন, জাতি তাঁদের মনে রাখবে। জামায়াতে ইসলামী যত দিন আছে, তত দিন এ শহীদ পরিবারের পাশে থাকবে। অনেকে আহত হয়েছেন। কেউ হাত, কেউ চোখ হারিয়েছেন। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসা করতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশে নিয়ে যেতে হবে। সরকারের উপদেষ্টারা পরিবারগুলোকে মাসিক সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ঘোষণা যেন মিডিয়ায় সীমাবদ্ধ না থাকে। আমরা চাই মাসে মাসে তাঁদের সহযোগিতা করা হোক। শহীদের কাছে আমরা ঋণী। এই ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত সাত পরিবারকে এক লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। মুন্সিগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির আ জ ম রুহুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সাইফুল আলম খান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আবদুল জব্বার, ইসলামী ছাত্রশিবির মুন্সিগঞ্জ জেলার সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।