জয় বাংলাদেশ: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অপকর্ম ঢাকতে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করতে ‘সংখ্যালঘু কার্ড’ অনেক খেলা হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, এই পুরোনো খেলার পুনরাবৃত্তি এ দেশে আর করতে দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের নেতা-কর্মীদের সমাবেশে লন্ডন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এ কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সংখ্যালঘুর কার্ড দিয়ে অনেক খেলা হয়েছে। সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু স্পর্শকাতর বিষয়, আর নির্যাতনের কল্পকাহিনি ফেঁদে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অপচেষ্টা দেশে-বিদেশে বারবার কারা করেছে, সেটা সবাই জানে। এই পুরোনো খেলার পুনরাবৃত্তি এ দেশে আর করতে দেওয়া হবে না।
দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে নেতা-কর্মীদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আসুন, আমরা এগুলোকে হয় কবর দিয়ে নিশ্চিহ্ন করি, নয়তো চিতায় পুড়িয়ে ভস্ম করে দিই।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে এক ধর্মের উপাসনালয় আরেক ধর্মের অনুসারীরা ঐতিহ্যগতভাবে যুগ যুগ ধরে রক্ষা করছেন। তারা বারবার প্রমাণ করেছে, এ দেশে সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু বলে কিছু নেই। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবারই এক ও অভিন্ন পরিচয়—আমরা সবাই বাংলাদেশি। শুধু কথায় নয়, কাজেও এর প্রমাণ দিতে হবে যখনই প্রয়োজন হবে।’
রাষ্ট্রকাঠামোর সংস্কার প্রসঙ্গ তুলে তারেক রহমান বলেন, প্রায় দুই বছর আগে দেশের সাংবিধানিক কাঠামো এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছে। যেটা সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য এখনো উন্মুক্ত। রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ৩১ দফার কথা উল্লেখ করে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘যাঁরা যে সংস্কারের প্রস্তাবনাই আনুন, আমাদের সংস্কার প্রস্তাবে সেগুলোর সবই অন্তর্ভুক্ত আছে।’
বিজয় এখনো অনেক দূরে, এমন মন্তব্য করে তারেক রহমান নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা গত ১৭ বছর বিরোধী দলে ছিলাম, আজও আছি। এখন আত্মতুষ্টির সময় নয়, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সংকটকালে যেমন দলের পাশে ছিলেন, ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের জনমানুষের প্রত্যাশার ভাষা বুঝে তাদের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করলে বিএনপি দেশের মানুষকে একটা নতুন বাংলাদেশ উপহার দিতে পারবে।’
তারেক রহমান নেতা-কর্মীদের আবারও সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেম, বেগম খালেদা জিয়ার ত্যাগ, আর শতসহস্র নেতা-কর্মীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে বিএনপি জনগণের আস্থা আর বিশ্বাসের যে জায়গায় পৌঁছেছে, কিছু বিপথগামীর হঠকারিতায় সেটা বিনষ্ট হতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে দল আপসহীন। সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে দল সেটার প্রমাণ রেখেছে।
প্রসঙ্গত, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে চট্টগ্রাম দক্ষিণের কমিটি বাতিল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। আর ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফখরুদ্দিন আহমেদকে বহিষ্কারের পর তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।