হামাসের শীর্ষ নেতা ও রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে গোষ্ঠীটি। বুধবার তার নিহত হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এ ঘোষণা দেন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুক।
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরান গিয়েছিলেন হানিয়া। সেখানে বুধবার এক হামলায় নিহত হন তিনি এবং তার এক দেহরক্ষী। যে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন হানিয়া, সেই বাড়িটি উড়িয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা।
এই ঘটনার পর হামাস পরিচালিত টেলিভিশন চ্যানেল আল-আকসা টিভিতে হানিয়ার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে মুসা আবু মারজুক বলেন, ‘আমাদের ভাই, নেতা, মুজাহিদ এবং (গাজার) সরকারপ্রধান ইসমাইল হানিয়া ইহুদি জায়নবাদীদের হামলায় নিহত হয়েছেন। আমরা এই কাপুরুষোচিত হামলার জবাব দেব এই হত্যার জন্য যারা দায়ী, তাদেরকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।’
হামাসের আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা সামি আবু জুহরি সৌদির টেলিভিশন চ্যানেল আর আরাবিয়াকে বলেন, ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার মাধ্যমে যে উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায় শত্রুরা, তা কখনও পূরণ হবে না।
এদিকে ইরানে ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তেহরানের মিডল ইস্ট স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টারের গবেষক আব্বাস আসলানি। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, এটি একটি বড় ঘটনা কারণ, তিনি ইরানের রাষ্ট্রপতির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরপরই এবং শীর্ষস্থানীয় ইরানি কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করার পর নিহত হয়েছেন।
আসলানি আরও বলেন, বর্তমানে আমরা যখন কথা বলছি, উত্তেজনা অবশ্যম্ভাবী মনে হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, এই হত্যাকাণ্ড এমন সময়ে ঘটেছে যখন নতুন ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান পশ্চিমা বিশ্বের সাথে সংলাপ এবং সম্পৃক্ততার কথা বলছিলেন। ‘নেতানিয়াহু এটি ঘটতে দিতে চায় না’ তিনি বলেন।
আসলানি বলেন, আমরা এখন যুদ্ধবিরতির বিদায় জানাতে পারি। এই ঘটনা আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী তার রাজনৈতিক জীবন দীর্ঘায়িত করার জন্য সবকিছু করার চেষ্টা করছেন। নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান।
এদিকে ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার ‘রক্ত কখনও বৃথা যাবে না’। ইরানি রাষ্ট্রীয় মিডিয়া অনুসারে নাসের কানানি বলেছেন, তেহরানে হানিয়ার শহীদ হওয়া তেহরান, ফিলিস্তিন এবং প্রতিরোধ আন্দোলনের মধ্যে গভীর এবং অবিচ্ছিন্ন বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করবে।