পরিমাণমত লবণ খাবারের স্বাদকে বাড়িয়ে তোলে। খাবারে লবণ কম বা বেশি হলে স্বাদ নষ্ট হয়। তবে অনেকেই ভাতের সঙ্গে কাঁচা লবণ খেতে পছন্দ করেন, অনেকে আবার তরকারি রান্নার সময়ও প্রয়োজনের থেকে একটু বেশি লবণ ব্যবহার করেন। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
পুষ্টিবিদদের মতে, অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কিছু খারাপ দিক রয়েছে। কারণ লবণের একটি উপাদান হচ্ছে সোডিয়াম। যেটি অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
খাবার লবণ হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড। প্রতিদিন সোডিয়াম ক্লোরাইড গ্রহণের মাত্রা ২ হাজার ৪০০ মিলিগ্রামের মধ্যে সীমিত রাখতে হবে, লবণের হিসেবে ৬ গ্রাম বা ১ চা চামচের সমান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় সব মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ করে থাকে। পূর্ণ বয়স্ক একজন মানুষ দিনে প্রায় ৪৩১০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম গ্রহণ করে। যা ডাব্লিউএইচও নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
১১ বছর ও এর বেশি- ৬ গ্ৰাম, ৭-১০ বছর- ৫ গ্ৰাম, ৪-৬ বছর – ৩ গ্ৰাম, ১-৩ বছর -২ গ্ৰাম এর বেশি খাওয়া লবণ খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া যাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ আছে তাদের খাবারে লবণের পরিমাণ কমবেশি হলে অবস্থার অবনতি হতে পারে। চলুন জেনে নিই অতিরিক্ত লবণ যেসব ক্ষতি করে:
রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে
যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন তারা লবণ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ফলে দেখা দিতে পারে উচ্চ রক্তচাপ। এর কারণ হল, সোডিয়াম-জাতীয় খাবার রক্তের চাপ বাড়ায়। ফলে ধনীর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রক্ত প্রবাহিত হয়। সেইসঙ্গে এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং কিডনির সমস্যার ঝুঁকি। যাদের উচ্চ রক্তচাপ নেই তারাও অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট করে
বেশি লবণ খেলে কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। কিডনি ভালো না থাকলে তার প্রভাব পড়বে পুরো শরীরেই। তাই সময় থাকতে সতর্ক হোন।
পানির পিপাসা
অতিরিক্ত লবণ-জাতীয় খাবার খাওয়া মুখ শুষ্ক করে ফেলে। তাই তেষ্টা বৃদ্ধি পায়। এর কারণ হল, দেহ সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে পানির ঘাটতি অনুভব করে। শুধু নোনতা খাবার খাওয়াই না বরং লবণ ও গরম পানি দিয়ে ‘গারগল’ করা হলেও কয়েক মিনিট পরে মুখে শুষ্ক অনুভব হয়।