জয় বাংলাদেশ : ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কালে আর্থিক খাতের আলোচিত ব্যক্তি চৌধুরী নাফিজ সরাফাতসহ তিনজনের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবে সব ধরনের লেনদেন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। অপর দুই ব্যক্তি হলেন হাসান তাহের ইমাম ও জালাল একরামুল কবির।
সাত কার্যদিবসের মধ্যে এসব ব্যক্তির বিও হিসাবের হালনাগাদ তথ্য বিএসইসিকে জানাতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও বিও হিসাব সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএল) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শেয়ারবাজারে একটি ব্রোকারেজ হাউসের ওপর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্তে প্রতিবন্ধকতা তৈরির দায়ে উল্লিখিত ব্যক্তিদের সব বিও হিসাবের লেনদেন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ আজ বৃহস্পতিবার এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেন।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শেয়ারবাজারের সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের মালিকানাধীন ব্রোকারেজ হাউস মাল্টি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড সার্ভিসেসে গতকাল বুধবার সরেজমিনে তদন্তে যায় বিএসইসির গঠিত তদন্ত কমিটি। কিন্তু ব্রোকারেজ হাউসটির কর্মকর্তারা বিএসইসির তদন্ত কমিটিকে কোনো ধরনের সহায়তা করেননি। এ কারণে তদন্ত কমিটি ব্রোকারেজ হাউসটি থেকে কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি। এতে ব্রোকারেজ হাউসটিতে থাকা বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও অর্থের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া বিএসইসির তদন্তে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন। এসব বিষয় বিবেচনা করেই ব্রোকারেজ হাউস মাল্টি সিকিউরিটিজসহ রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের মালিকানায় থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও হাসান তাহের ইমাম রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়া মাল্টি সিকিউরিটিজের কর্মকর্তা জালাল একরামুল কবিরের বিও হিসাবও স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত থাকা অবস্থায় এই তিনজনের বিও হিসাব থেকে কোনো অর্থ ও শেয়ার স্থানান্তর করা যাবে না।
বিএসইসির নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ব্রোকারেজ হাউস হিসেবে মাল্টি সিকিউরিটিজকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনের জন্য যে ফ্রি লিমিট বা মার্জিন লিমিট সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তা–ও বন্ধ থাকবে। স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ারধারী হিসেবে মাল্টি সিকিউরিটিজ যে লভ্যাংশ পায়, সেটিও বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও), পুনঃগণপ্রস্তাব (আরপিও) ও কোয়ালিফায়েড ইনভেস্টর অফারের (কিউআইও) ক্ষেত্রে যে কোটা সুবিধা ব্রোকারেজ হাউস হিসেবে মাল্টি সিকিউরিটিজ পায়, সেটিও বাতিল করা হয়। ব্রোকারেজ হাউসটি নতুন করে কোনো শাখা বা বুথও খুলতে পারবে না। এমনকি এটির সব ধরনের সনদ নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।