ইসরায়েল যদি লেবাননে বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করতেই থাকে, তাহলে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের নতুন এলাকায় আঘাত হানবে। বুধবার (১৭ জুলাই) টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে এই হুমকি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহ।
মঙ্গলবার ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে পাঁচজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। যাদের সবাই সিরিয়ার নাগরিক এবং এদের মধ্যে তিনটি শিশু রয়েছে। এর আগের দিন অন্তত তিনজন লেবানিজ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন বলে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ও নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা লেবাননে হিজবুল্লাহর যোদ্ধা এবং অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে এবং বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করছে না।
আশুরা উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে নাসরাল্লাহ বলেছেন, বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করা অব্যাহত থাকলে প্রতিরোধ বাহিনী এমন এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করবে যা আগে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি।
সম্প্রতি ইসরায়েল লেবাননে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে বলে ভাষণে দাবি করেছেন তিনি।
ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী ও লেবাননের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক ও রাজনৈতিক বাহিনী হিজবুল্লাহ। ৭ অক্টোবর গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি যুদ্ধের প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলের দক্ষিণ সীমান্তে হামলা শুরু করেছে। এরপর থেকেই ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে গোলাগুলি বিনিময় চলছে।
ইরান-সমর্থিত আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সিরিয়া ও ইরাকের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং ইয়েমেনের হুথিরাও রয়েছে। ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলে এসব গোষ্ঠীও হামলা চালিয়ে আসছে।
রয়টার্সের পরিসংখ্যান অনুসারে, লেবাননে এই সংঘাতে ১০০ জনেরও বেশি বেসামরিক লোক এবং ৩০০ জনেরও বেশি হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। লেবাননের সীমান্তবর্তী শহর ও গ্রামগুলোতে এমন ধ্বংসযজ্ঞ দেখা দিয়েছে যা ২০০৬ সালের ইসরায়েল-লেবানন যুদ্ধের পর থেকে দেখা যায়নি।
নাসরাল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঘরবাড়িগুলো ‘আগের চেয়ে আরও সুন্দরভাবে পুনর্নির্মাণ করা হবে’।
নাসরাল্লাহ আরও বলেছেন, লেবাননে সর্বাত্মক যুদ্ধ করার ক্ষমতা নেই ইসরায়েলের। গাজার মধ্যে তাদের সামরিক সক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।
তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সব ট্যাংক ধ্বংস হয়ে যাবে যদি তারা লেবাননে প্রবেশ করে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে আশঙ্কা বেড়েছে যে, ইসরায়েল লেবাননে সামরিক অভিযান সম্প্রসারণ করতে পারে, যা একটি বড় যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ইসরায়েল বলেছে, তারা একটি বৃহত্তর অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না, তবে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।