Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeআন্তর্জাতিকইসরায়েলের নির্মম হত্যাযজ্ঞ, হামলায় গাজায় কী ক্ষতি হলো, পুনর্নির্মাণে কত অর্থ লাগবে

ইসরায়েলের নির্মম হত্যাযজ্ঞ, হামলায় গাজায় কী ক্ষতি হলো, পুনর্নির্মাণে কত অর্থ লাগবে

জয় বাংলাদেশ: ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যখন যুদ্ধ থামবে, তখন গাজাকে আবার প্রায় নতুন করেই গড়ে তুলতে হবে। গাজার এই পুনর্নির্মাণের জন্য শত শত কোটি ডলার প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এ বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য নিয়ে এই প্রাক্কলন করেছে সংস্থাটি।

সর্বশেষ দফার সংঘাতের শুরু অক্টোবরের ৭ তারিখে, যখন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। বছরের পর বছর ধরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। হামাস এই ভূখণ্ড শাসন করছে। তাদের ওই হামলার পর ইসরায়েল সর্বশক্তি নিয়ে গাজায় আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। গাজায় এখন পর্যন্ত যে ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে, তার একটি হিসাব দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

কত মানুষ মারা গেছে
হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ২০০। এই হিসাব দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় যে পাল্টা হামলা চালায়, তাতে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪১ হাজারের বেশি। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য আরও জানাচ্ছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৯৫ হাজার জন আহত হয়েছে।

ধ্বংসস্তূপ সরাতে কত দিন লাগবে
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে। জাতিসংঘের হিসাবে, অন্তত ৪ কোটি টন ইট–পাথরের ধ্বংসস্তূপ তৈরি হয়েছে। আক্রমণ চালাতে ইসরায়েল যে বোমা বর্ষণ করেছে, তারই ফলাফল এই ধ্বংসস্তূপ। জাতিসংঘের ধারণা, ধ্বংসস্তূপ সরাতে ১৫ বছর লাগবে, আর এ কাজে অর্থ খরচ হবে ৫০ থেকে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার।

ধ্বংসস্তূপের মধ্যে এসবেস্টস এবং মানুষের মরদেহের অংশ রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মে মাসে জানিয়েছে, তাদের ধারণা যে ধ্বংসস্তূপের নিচে ১০ হাজার মানুষের মরদেহ রয়েছে।

কত বাড়ি ধ্বংস হলো
গাজায় যত বাড়ি ধ্বংস হয়েছে, সেগুলো পুনর্নির্মাণ করতে অন্তত ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। তবে গত মে মাসে জাতিসংঘের প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাড়িগুলো পুনরায় তৈরি করতে আরও কয়েক দশক সময় লেগে যেতে পারে। ফিলিস্তিনিদের পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে যে যুদ্ধে ৮০ হাজারের মতো বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।

জাতিসংঘের হিসাবে, পুরো গাজা অঞ্চলে ১৯ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। কিছু কিছু মানুষ ১০ বারের বেশিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যুদ্ধের আগে গাজার জনসংখ্যা ছিল ২৩ লাখ।

অবকাঠামোর ক্ষতি কতটা হলো
গাজায় অবকাঠামোর যে ক্ষতি হয়েছে, তার আর্থিক মূল্য ১ হাজার ৮৫০ কোটি ডলার। বসতবাড়ি, বাণিজ্যিক ভবন, কারখানা এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জ্বালানির মতো অবকাঠামো ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ এক প্রতিবেদনে তা বলা হয়েছে।

গাজার পানি উৎপাদনের সক্ষমতার প্রায় পুরোটাই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে অক্সফাম জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডের পানির কূপের ৮৮ শতাংশ এবং পানি লবণমুক্ত করার সব কটি ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

গাজার মানুষেরা কী খেয়ে বেঁচে আছে

গাজার মানুষ ক্ষুধার্ত। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ভূখণ্ডের জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য উৎপাদনের জন্য সামান্য ভূমি আছে গাজায়। কিন্তু এই ভূমির অর্ধেকের বেশি সংঘাতে কারণে ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।

যুদ্ধের ফলে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বাগানের পর বাগান ধ্বংস হয়েছে। চরম ক্ষতির শিকার হয়েছে ফসল ও সবজির খেত। ১১ মাস ধরে গাজায় বোমাবর্ষণ চলছে। ফলে সেখানে খাদ্যাভাব বেড়েই চলেছে।

স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় আর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কী অবস্থা
আগস্টে প্রকাশিত গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনে বিভিন্ন জনপ্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় তখন পর্যন্ত ২০০ সরকারি ভবন, ১২২টি বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়, ৬১০টি মসজিদ ও ৩টি গির্জা ধ্বংস হয়েছে।

গাজার পূর্ব সীমান্তে ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রার ওপর একটি চিত্র দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ক্রাইসিস অ্যাভিডেন্স ল্যাব। ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত এই এলাকার ৯০ শতাংশ ভবন সম্পূর্ণ কিংবা আংশিকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। এগুলোর মোট সংখ্যা ৩ হাজার ৫০০–এর বেশি।

 

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments