জয় বাংলাদেশ : চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য উন্নয়ন সহায়তা খাতে বরাদ্দ কমিয়েছে বন্ধু প্রতীম দেশ ভারত। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটে বিভিন্ন দেশকে সহায়তা দেওয়ার জন্য যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তাতে চলতি বছর বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ ৮০ কোটি রুপি বা ৪০ শতাংশ কমানো হয়েছে। তবে বরাদ্দ পাবার শীর্ষ তালিকায় আছে ভুটান, তবে গত বছরের তুলনায় দেশটি কম ভারতীয় সহায়তা পাবে।
জানা গেছে, এ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারত সব মিলিয়ে ১২০ কোটি রুপি উন্নয়ন সহায়তা দেবে বাংলাদেশকে। গত অর্থবছরের এই সহায়তার পরিমাণ ছিল ২০০ কোটি রুপি। তবে বাংলাদেশের জন্য সহায়তার পরিমাণ কেন কমছে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
এদিকে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি জোট নির্বাচনে জিতে নতুন সরকার গঠনের পর এটি ছিল প্রথম বাজেট, যা মঙ্গলবার ঘোষণা করা হয়। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় সরকার একটি অন্তর্বর্তী বাজেট দিয়েছিল। ভারতের অর্থবছর শুরু হয় এপ্রিলে।
ভারতের একাধিক গণমাধ্যম বলছে, ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি অর্থ সাহায্য দেওয়া হচ্ছে ভুটানকে। এর পরিমাণ ২ হাজার ৬৮ কোটি রুপি। তবে আগের বছর এই সহায়তার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪০০ কোটি রুপি। মরিশাসকে দেওয়া হবে ৩৭০ কোটি রুপি, আগের বছরে যা ছিল ৪৬০ কোটি রুপি। আর মিয়ানমার পাবে ২৫০ কোটি রুপি। গত বছর দেশটির জন্য বরাদ্দ ছিল ৪০০ কোটি রুপি।
যদিও এ অর্থবছরে মালদ্বীপের জন্য ভারতীয় অর্থ সাহায্য উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। চলতি অর্থবছরে মালদ্বীপ ৪০০ কোটি রুপি পাবে, যেখানে আগের বছর দেশটি ৭৭০ কোটি রুপির ভারতীয় উন্নয়ন সহায়তা পেয়েছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে যে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দেওয়া হয়েছিল, তাতে মালদ্বীপের জন্য সহায়তা ২২ শতাংশ কমিয়ে ৬০০ কোটি রুপি প্রস্তাব করা হয়েছিল। তবে নতুন বাজেটে এই সহায়তা আরও কমানো হয়েছে, ফলে মালদ্বীপ আগের বছরের তুলনায় ৪৮ শতাংশ কম সহায়তা পাবে।
মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েন রয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ মুইজ্জু। তিনি চীনপন্থী হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। তাঁর নির্বাচনের পরই মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। আর এই অবনতিশীল সম্পর্কের মধ্যেই মালদ্বীপের জন্য ভারতের অর্থসহায়তা বড় পরিমাণে কমানো হলো।
ভারতের বৈদেশিক সহায়তা অবশ্য বাড়ছে নেপাল ও শ্রীলঙ্কার জন্য। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নেপালের জন্য ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকার ৭০০ কোটি রুপি বরাদ্দ রেখেছে, যা হবে দিল্লির দেওয়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৈদেশিক সহায়তা। গত বছর নেপাল পেয়েছিল ৫৫০ কোটি রুপি। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৪৫ কোটি রুপি, গত বছর যা ছিল ১৫০ কোটি রুপি। ভারতের এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র আফগানিস্তান চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২০০ কোটি রুপি পাবে। গত অর্থবছরে কাবুলের জন্য দিল্লি বরাদ্দ রেখেছিল ২২০ কোটি রুপি। সে হিসাবে আফগানিস্তানের জন্য বরাদ্দ অল্পই কমেছে।
ভারতের বাজেটে বিভিন্ন দেশের জন্য উন্নয়ন সহায়তা বাবদ মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪ হাজার ৮৮৩ কোটি রুপি। প্রতিবেশী দেশ ছাড়াও ল্যাটিন আমেরিকা ও ইউরোশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে এই অর্থ খরচ করার পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার।