জয় বাংলাদেশ: ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। নতুন করে ক্ষমতায় গিয়ে অভিবাসন, অর্থনীতি ও ইউক্রেন যুদ্ধের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সিনেটে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত হওয়ায় তার পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নে কংগ্রেসের সমর্থন পেতে সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজয় ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার শাসনের মূলমন্ত্র হবে: প্রতিশ্রুতি দেয়া, প্রতিশ্রুতি পালন করা। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি রাখবো।’
১) অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কার
প্রচারণায় ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ অবৈধ অভিবাসী বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করার অঙ্গীকার করেছেন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এতো ব্যাপকভাবে অভিবাসীদের বহিষ্কারে আইনি ও পরিচালনাগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে, যা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
২) অর্থনীতি, কর ও শুল্ক নীতি
ট্রাম্প মুদ্রাস্ফীতি কমানো ও কর সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি টিপস আয়ের ওপর কর মওকুফ এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর বাতিলের পরিকল্পনা করেছেন। এছাড়া, অধিকাংশ বিদেশি পণ্যের ওপর ১০% শুল্ক আরোপ এবং চীনের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৬০% শুল্ক আরোপের কথা বলেছেন, যা কিছু বিশ্লেষকের মতে ভোক্তা ব্যয় বাড়াতে পারে।
৩) জানুয়ারির দাঙ্গাকারীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা
ট্রাম্প ২০২১ সালের জানুয়ারির ক্যাপিটল দাঙ্গায় দোষী সাব্যস্তদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার মতে, এদের অনেকেই “রাজনৈতিক বন্দি” এবং তাদের মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তিনি তার সমর্থকদের কাছে পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
৪) বিশেষ কাউন্সেল জ্যাক স্মিথকে বরখাস্ত
ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলে দ্রুততার সঙ্গে বিশেষ কাউন্সেল জ্যাক স্মিথকে বরখাস্ত করার কথা বলেছেন, যিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি মামলার তদন্ত করছেন। ট্রাম্প এ তদন্তগুলোকে “রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
৫) ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান
ট্রাম্প ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের জন্য মার্কিন অর্থ ব্যয়ের সমালোচনা করেছেন এবং ক্ষমতায় আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি সমঝোতার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও তিনি কীভাবে এই সমঝোতা অর্জন করবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
৬) গর্ভপাত নিষেধাজ্ঞা নয়
ট্রাম্প জাতীয় পর্যায়ে গর্ভপাত নিষেধাজ্ঞা আরোপে আগ্রহী নন, বরং প্রতিটি রাজ্য যেন তাদের নিজস্ব আইন তৈরি করতে পারে, সেই নীতিকে সমর্থন করেছেন।
৭) জলবায়ু সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কমানো
ট্রাম্প পরিবেশগত বিধিনিষেধ শিথিল করার পরিকল্পনা করেছেন এবং পুনরায় তেল ও গ্যাস খননের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি মনে করেন, এতে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি খরচ কমানো সম্ভব হবে, যদিও বিশ্লেষকরা এতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
ট্রাম্পের এই প্রতিশ্রুতিগুলো নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে, কারণ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কিছু প্রতিশ্রুতির বিস্তারিত নেই এবং কিছু প্রতিশ্রুতি আইনি ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে।