জয় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং কোটা আন্দোলন তাদের হাতে নেই। এখনকার কর্মসূচি বিএনপি-জামায়াতের প্রেসক্রিপশনে হচ্ছে ও তাদের লাশের রাজনীতির কারণেই ৬ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের মধ্যে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার উদ্দেশ্যে বিএনপি-জামাত চাচ্ছিল দেশে লাশ তৈরি হোক এবং মঙ্গলবার তারা এই লাশগুলো তৈরি করেছে, ৬ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান বলেন, মঙ্গলবার সারাদেশে যে নৈরাজ্যের অপচেষ্টা হয়েছে, এর প্রধান কারণ হচ্ছে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা।’
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে, মোটর সাইকেল ভাঙচুর, মেট্রোরেলে হামলা হয়েছে। এগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাজ না। বিএনপি-জামাত ঢুকে এসব কর্মকাণ্ড করেছে। আন্দোলনকারীরা এখন তাদের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা রাজাকারদের পক্ষে স্লোগান দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খন্ডকালীন অধ্যাপক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বিএনপি-জামাত কোটা আন্দোলনের কর্মসূচির ওপর ভর করে মাঠ অস্থিতিশীল করতে চাইছে। আমরা তা হতে দেব না। তারেক রহমান নির্দেশ দিচ্ছে আন্দোলনে ঢুকে পড়তে। যারা কোটা নিয়ে আন্দোলন করছো সেই আন্দোলন আর তোমাদের হাতে নাই। ছিনতাই হয়ে গেছে। তোমাদের নেতারা বিক্রি হয়ে গেছে। বিএনপি-জামাত লাশ চেয়েছিল, পেয়েছে। তাদের ক্যাডাররা নেমে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে ৬ জনকে খুন করেছে। সরকার তদন্ত করছে। যে বা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। আর কোটার বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন। সরকার এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তাই তোমাদের প্রতি অনুরোধ, চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করো। সরকার তোমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু তোমাদের আন্দোলন বিএনপি-জামাত ছিনতাই করেছে। তোমাদের নেতারা বিএনপির কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। বিএনপি-জামায়াতের প্রেসক্রিপশনে কাজ করছে। তোমরা সতর্ক থাকবে, যাতে বিএনপি-জামাতের হাতের পুতুলে পরিণত না হও।’
‘ছাত্র-ছাত্রীরা না বুঝেই কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছে’ মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের আগের দাবির প্রেক্ষিতে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে সরকারি চাকুরিতে কোটাপদ্ধতি সরকার বাতিল করেছে। গত কয়েকটি বিসিএস পরীক্ষা সম্পূর্ণ কোটাবিহীনভাবে হয়েছে।
আগে স্বাধীনতার পর থেকেই কোটা ছিল, স্বাধীনতার আগেও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, নারী ও জেলা কোটা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল না, যেটি আমাদের সরকার পূর্ণবহাল করেছিল। পরে ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে আমাদের সরকার কোটা বাতিল করে। এরপর একজন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি হাইকোর্টে গিয়েছিল। তখন হাইকোর্ট সরকারের কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে কোটা পূর্ণবহালের কথা বলে।
মন্ত্রী বলেন, এখানেই শেষ নয়, হাইকোর্টের এই রায় আবার সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করে দিয়েছে। অর্থাৎ বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের স্থিতাদেশ অনুযায়ী কোটা নাই। কোটার ভিত্তিতে চাকুরি হবে না সেই পরিস্থিতিই বিরাজমান। সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা।