সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের আদেশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রধান ফটক (ডেইরি গেইট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। পরে পাঁচ মিনিট মহাসড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে শিক্ষার্থীদের ‘একাত্তরের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘সারাবাংলায় খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’ সহ নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। এছাড়া সমাবেশে অবিলম্বে সরকারি চাকরিতে সকল প্রকার কোটা বাতিলের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের (৪৬তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী খালিদ মাহমুদ তন্ময় বলেন, ‘কোটা পদ্ধতি সমান অধিকারের দাবিতে সংগঠিত মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্যের সাথে সাংঘর্ষিক। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্যের সাথে সাংঘর্ষিক এমন কোনো সিদ্ধান্তের পক্ষ নেবে না।’
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা পত্রে উল্লিখিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিতের সাথে সাংঘর্ষিক। আমাদের এ আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের আন্দোলন।’
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, ‘২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হয়। তবে পুনরায় কোটা বহাল করার যেই পায়তারা চলছে, তা আদতে ন্যাক্কারজনক। এছাড়া দেশের মেধাবী ও যোগ্য শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা। একটি স্বাধীন দেশে এমন বৈষম্য থাকবে, তা কখনোই কাম্য নয়।’
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের (৪৯তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করায় আমরা বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছি। কোটাব্যবস্থা পুনর্বহাল হলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।’
এর আগে, গতকাল বুধবার সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল থাকবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের করা এক রিটের প্রেক্ষিতে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।