জয় বাংলাদেশ: বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত তিনজনের পরিবার গতকাল আদালতে তিনটি হত্যা মামলা করেছে। এগুলোর একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়) ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদকেও আসামি করা হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আহম্মেদ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলা তিনটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
নিহত তিনজন হলেন যাত্রাবাড়ী এলাকার ফল বিক্রেতা ফরিদ শেখ, কলেজশিক্ষার্থী ইমাম হাসান ও স্কুলছাত্র সিয়াম। এর আগের দিন গত সোমবার কলেজছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যার অভিযোগে লালবাগ থানায় শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা হয়।
যাত্রাবাড়ীতে ফল বিক্রেতা ফরিদ শেখকে হত্যার অভিযোগে মামলাটি করেছেন তাঁর বাবা সুলতান শেখ। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার ছেলে ও তাঁর সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ ২১ জনকে আসামি করা হয়েছে। অপর আসামিরা হলেন সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের নেতা আমির হোসেন আমু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান।
মামলায় বলা হয়েছে, ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে তিনটার দিকে যাত্রাবাড়ীর হানিফ উড়ালসড়কের টোল প্লাজার সামনের সড়ক দিয়ে হেঁটে ফলের দোকানে যাচ্ছিলেন ফরিদ শেখ। তখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ গুলি চালায়। গুলিতে গুরুতর জখম হন ফরিদ। পরে তাঁকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনাসহ অন্যরা হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেন।