Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeআন্তর্জাতিকক্ষমতা গ্রহণের আগেই তৎপরতা শুরু ট্রাম্পের

ক্ষমতা গ্রহণের আগেই তৎপরতা শুরু ট্রাম্পের

জয় বাংলাদেশ : যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে তৎপরতা দেখাতে শুরু করেছেন। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা ও গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে দেশের ভেতর অভিবাসনবিরোধী অবস্থান শক্ত করা ও নিজের প্রশাসন সাজানোর কাজগুলোয় তৎপরতা দেখাতে শুরু করেছেন তিনি।

৫ নভেম্বরের নির্বাচনে জয় পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় ইউক্রেনে যুদ্ধ সম্প্রসারণ না করতে পুতিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে সোমবার ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদন অস্বীকার করা হয়েছে। ক্রেমলিন বলেছে, এ ধরনের আলোচনার কথা পুরোপুরি কাল্পনিক। ট্রাম্পের সঙ্গে এ ধরনের কথা বলার বিষয়ে পুতিনের এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই।

সূত্র প্রকাশ না করে ওয়াশিংটন পোস্ট প্রথম ট্রাম্প ও পুতিনের ফোনালাপের কথা জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে বলেন পুতিনকে। একটি অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে এ ফোনকলের বিষয়টি জানানো হয়।

তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এটা সম্পূর্ণ অসত্য। পুরোপুরি কাল্পনিক। কোনো আলোচনা হয়নি।

ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফেরার মধ্য দিয়ে বছর তিনেক ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধের রাশ টানার সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ দেখা দিয়েছে। কেননা, দ্রুত যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে ট্রাম্প। এ ছাড়া কিয়েভের জন্য ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে দেওয়া কোটি কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা নিয়েও ট্রাম্পের প্রশ্ন রয়েছে।

এর আগে গত বুধবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও টেলিফোনে কথা বলেছেন ট্রাম্প। এ সময় তাঁদের সঙ্গে কথোপকথনে যুক্ত হন রিপাবলিকানদের কড়া সমর্থক ও ধনকুবের ইলন মাস্ক।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আড়াই বছর পেরিয়েছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চূড়ান্ত ও সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে। মস্কোর সেনারা এখনো দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা এ যুদ্ধ কীভাবে শেষ করা যায়, তা নিয়ে ভাবছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, নির্বাচিত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি ইউক্রেনে শান্তি আনবেন। কিন্তু কীভাবে তা করবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান পুতিন। নির্বাচনী প্রচারের সময় হত্যাচেষ্টার মুখে পড়ার পরও সাহস দেখানোর প্রশংসা করেন। ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কো প্রস্তুত বলেও বার্তা দেন তিনি।

ইউরোপে শান্তি ফেরাতে তৎপরতা

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে ইউরোপে শান্তি ফেরাতে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন ট্রাম্প। জার্মান সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, মার্কিন নির্বাচনের পর ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম ফোনে কথা বলেছেন শলৎজ। জার্মান মুখপাত্র স্টিফেন হেবেস্ট্রেইট রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, দুজনই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও বর্তমান ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে মতবিনিময় করেন।

এর আগে ট্রাম্প ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মিত্তে ফ্রেডেরিকসেনের সঙ্গেও কথা বলেন।

গাজায় শান্তি ফেরাতেও কাজ করতে চান ট্রাম্প। ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনি নেতা মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি সে ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে ট্রাম্পের জেতার পর সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের হুমকি মোকাবিলায় তিনি ও ট্রাম্প একই দৃষ্টি রাখবেন।

নিয়োগ দিচ্ছেন বিশ্বস্তদের

বৈশ্বিক পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়ার পাশাপাশি ট্রাম্পের পক্ষ থেকে নিজের প্রশাসন গোছানোর দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টি সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় সেখানে নেতা নির্বাচনের জন্য ট্রাম্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর বাইরে প্রতিনিধি পরিষদেও রিপাবলিকানরা জয়ের দ্বারপ্রান্তে।

এরই মধ্যে ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষায় সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের কাজ শুরু করেছেন। তিনি এ ক্ষেত্রে কট্টরপন্থী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত টম হফম্যানকে নিয়োগ দিয়েছেন। এর আগে তিনি হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন সুজি ওয়াইলসকে।

এ ছাড়া তিনি জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে এলিস স্টেফানিককে মনোনয়ন দিয়েছেন। অর্থাৎ সব ঠিক থাকলে ট্রাম্পের পরবর্তী মেয়াদে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করবেন নিউইয়র্কের রিপাবলিকান পার্টির নারী কংগ্রেস সদস্য এলিস।

 

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments