গাজা যুদ্ধের ১০০ দিন পূর্ণ হলো। গত ৭ অক্টোবরের পর থেকেই অবরুদ্ধ উপত্যকায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও ধ্বংসযজ্ঞের পরও শিগগির এ যুদ্ধ নিরসনের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
বিশ্লেষকরা এই যুদ্ধকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলমান সংঘাতের ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তাক্ত অধ্যায় হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে চিরতরে নির্মূল না করা পর্যন্ত তাদের অভিযান বন্ধ না করার যে প্রতিজ্ঞা ইসরায়েল করেছে, তারা সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে। এদিকে যুদ্ধের শততম দিনেও এ যুদ্ধ অবসানের কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না।
ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ২৩ হাজার ৮৪৩ জন নিহত এবং ৬০ হাজার ৩১৭ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরাইলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৩০০ জনের চেয়েও বেশি মানুষ।
গাজার মোট দালানের ৪৫ থেকে ৫৬ শতাংশ ধ্বংস অথবা বড় আকারে ক্ষতির শিকার হয়েছে। গাজার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৫টি আংশিকভাবে কার্যকর রয়েছে। বাকি ২১টির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ আছে।
ব্যাপক আকারে ক্ষুধা ও অনাহারে ভুগছেন পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি। গাজার ৬৯ শতাংশেরও বেশি স্কুল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
১৪২টি মসজিদ, ৩টি গির্জা ও ১২১টি অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে ছয় লাখ ২৫ হাজার শিক্ষার্থী।
ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ১৮ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইসরাইলের উত্তর ও দক্ষিণ সীমান্ত থেকে দুই লাখ ৪৯ হাজার ২৬৩ ইসরাইলি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। পশ্চিম তীর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এক হাজার ২০৮ ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েল এখন পর্যন্ত গাজায় আট হাজারের বেশি হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করার কথা জানিয়েছে। দেশটি এখন তাদের যুদ্ধ কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে কিছু সৈন্য তারা প্রত্যাহার করে নিয়েছে এবং দক্ষিণে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
গাজায় গত ১০০ দিনে যে মৃত্যু আর বিপর্যয় ঘটেছে তা ‘ভাগ করে নেওয়া মানবতাকে কলঙ্কিত’ করেছে বলে মনে করেন ইউএনডব্লিউআরএ এর প্রধান।