চীনের প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়েকে আর প্রসেসর সরবরাহ করবে না যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাক্টর উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান কোয়ালকম। বাণিজ্য ও প্রযুক্তি খাতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এ ঘোষণা প্রকাশ্যে এলো।
কোয়ালকমের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা (সিএফও) নিশ্চিত করেন, হুয়াওয়ে ভবিষ্যতে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে আর ফোরজি চিপ কিনবে না। এ ঘোষণা বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিদরা।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পরও বেশ কয়েক বছর ধরে কোয়ালকমের ৪জি চিপসের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হয়েছিল হুয়াওয়ে। হুয়াওয়ে কোয়ালকম প্রসেসর থেকে দূরে সরে এবং স্মার্টফোনের জন্য নিজস্ব কিরিন চিপসেট তৈরি করে নিজেদের স্বাধীনভাবে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টায় সফলতাও পায়।
হুয়াওয়ের পুরা ৭০ সিরিজ, যা কিরিন ৯০১০ চিপসেট এবং বিদেশিগুলির চেয়ে বেশি চীনা তৈরি উপাদান ব্যবহার করে, যা আত্মনির্ভরতার জন্য হুয়াওয়ের অনুসন্ধানের একটি উদাহরণ।
হুয়াওয়ে ও কোয়ালকমের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে সহযোগিতার সম্পর্ক ছিল। বর্তমানে হুয়াওয়ে টেলিকম সরঞ্জাম উত্পাদন করছে এবং পর্যায়ক্রমে বিশ্বব্যাপী এর কার্যক্রম প্রসার করছে। চীন সরকারের সমর্থিত ঋণ ও নীতি টেলিকম সরঞ্জাম বাজারে প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যকরভাবে প্রতিযোগিতায় সাহায্য করছে। অন্যদিকে কোয়ালকমও সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের একটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠান।
হুয়াওয়ে যখন থেকে নিজস্ব প্রসেসর ও মডেম তৈরি শুরু করে, তখন থেকেই প্রতিষ্ঠান দু’টির মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক সম্পর্ক শুরু হয়। সম্প্রতি হুয়াওয়ে ফাইভজি কমিউনিকেশন টেকনোলজিতে প্রচুর বিনিয়োগ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান দুটোর মধ্যে প্রতিযোগিতা আরো তীব্র হয়ে ওঠে। তবে হুয়াওয়ের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর কোম্পানিটির কাছে চিপ তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছিল না। এ কারণে কয়েক বছর প্রতিষ্ঠানটিকে কোয়ালকমের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়েছে।
কোয়ালকমের প্রসেসর ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হুয়াওয়ের একটি কৌশলগত পদক্ষেপ বলে মনে করছেন প্রযুক্তিবিদরা। বিভিন্ন সূত্রের তথ্যানুযায়ী, হুয়াওয়ে এরই মধ্যে নিজস্ব চিপসেট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।