জয় বাংলাদেশ : বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসির প্রধান করিম খান বৈঠক করেছেন। নিউইয়র্কে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মামলা নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়া বাংলাদেশে গত জুলাই-অগাস্ট মাসে গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে যে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে, সেসব ঘটনায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা করার উপায় ও পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয় তাদের মধ্যে। প্রধান উপদেষ্টার ফেসইবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসির প্রধান করিম খানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে বাংলাদেশে গত জুলাই-অগাস্টে সংঘটিত গণহত্যা নিয়ে আলোচনা হয়।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের ফাঁকে বৈঠকটি হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেই সবুক পেজে দেয়া পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাবিত তিন দফার প্রশংসা করেছেন আইসিসি প্রধান। সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে ছাত্ররা যে আন্দোলন শুরু করে তা তীব্রতা পায় জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে। গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে রংপুরের আবু সাঈদসহ সারাদেশে ছয়জন নিহত হওয়ার পর আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করে। এরপর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে রূপ নেয়।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর জুলাই-অগাস্টে নিহত এবং আহতদের তালিকা তৈরি করা হয়। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ৭০৮ জন নিহত এবং ২৫ হাজার মানুষের আহত হওয়ার তথ্য পাওয়ার কথা জানায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পরিবর্তন আনা হয়।
অগাস্টের তৃতীয় সপ্তাতে শেখ হাসিনার সময়ে নিয়োগ পাওয়া প্রধান প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলীসহ ট্রাইব্যুনালের ১৩ জন প্রসিকিউটর পদত্যাগ করেন। পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নতুন করে ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে ৫ সেপ্টেম্বর প্রধান প্রসিকিউটরের দায়িত্ব দেয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলামকে।
তার সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আরও চার আইনজীবীকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠন করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কয়েকশ মৃত্যুর ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে বিবেচনা করে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েক ডজন মানুষের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য এ ট্রাইব্যুনালে এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা করার উপায় ও পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন তারা।