বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের নির্দেশ মতো বিরোধী দলকে নির্যাতন করাই আওয়ামী দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ। বিগত ১৫-১৬ বছরে আওয়ামী সরকার অনিয়ম, অপচয় ও মহাদুর্নীতিকে দুদকের তলায় ঢেকে রেখেছে। সেই কমিশন দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ পুলিশ এবং সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সঠিক তদন্ত হবে বলে জনগণ বিশ্বাস করে না। শেখ হাসিনার স্বার্থেই দুদক কাজ করে।
বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, পর্দাকাণ্ড, বালিশকাণ্ড থেকে শুরু করে মতিউর কাণ্ড পর্যন্ত অসংখ্য কাণ্ডকারখানা এবং পাচারকৃত লুটের টাকার অনুসন্ধানে উদাসীনতা দীর্ঘ দেড় দশক ধরে জনগণ দেখে আসছে। অথচ দুর্নীতি দমন কমিশন ‘রিপ ভ্যান উইঙ্কেল’- এর মতো ঘুমিয়ে থেকেছে। জনগণের টাকার একচেটিয়া লুণ্ঠন ও আত্মসাৎকারীদের ডামি আওয়ামী সরকার মাফ করে দিয়েছে। গায়ে দুর্নীতির কালি মাখা আওয়ামী সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াটা জাতীয় কৌতুক ছাড়া আর কিছু নয়।
তিনি বলেন, ডামি সরকারের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীন, যে ব্যক্তি যত শক্তিশালী হোক না কেন দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে কমিশন নিজ প্রক্রিয়া অনুযায়ী কাজ করে যাবে। কিন্তু আজকাল সংবাদপত্রের পাতায় দৃষ্টি দিলেই বেনজীর, মতিউর, আসাদুজ্জামান আরও কত নাম আমরা দেখতে পাচ্ছি। এই সমস্ত দুর্নীতির মহানায়করা সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে বড় বড় সরকারি পদে অধিষ্ঠিত থাকলো কীভাবে? এর উত্তর কি প্রধানমন্ত্রী দিতে পারবেন? তাহলে কি কোনো ভাগ-বাটোয়ারার কারণে সমস্যা হওয়ায় তাদের সব গোপন বিষয় ফাঁস করে দেওয়া হচ্ছে?
ভারতে বর্ণবাদের করালগ্রাসে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ক্ষত-বিক্ষত উল্লেখ করে রিজভী বলেন, সেই দেশের সাথে বাংলাদেশের ডামি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নানা চুক্তি ও সমাঝোতা স্মারকে সই করেছেন। বাংলাদেশের জনগণ এহেন দুই সরকারের সমাঝোতার উদ্যোগ অসম এবং বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী বলে মনে করে। এতে বাংলাদেশের মানুষ তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।
ট্রানজিট ও এশিয়ান হাইওয়ের নামে শেখ হাসিনা মূলত ভারতকে করিডোর দিচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি চিরদিনের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে ভারতের ক্রীতদাস বানানোর গভীর অভিসন্ধি। ১৯৯৬ সালে ভারতের একটি মাসিক প্রকাশনার রিসার্চ এনালিস্ট সংঙ্গীতা থাপলিয়ান লিখেছিলেন, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাগ্রহণ বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের ট্রানজিট পাওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই রেলওয়ে করিডোর স্থাপনের চুক্তি তারাই প্রতিফলন। বাংলাদেশের মানুষ কখনই দিল্লির অধীনতা-বশ্যতা মানেনি এবং ভবিষ্যতেও মানবে না, যেমন পিন্ডির বশ্যতা মানেনি।