জেবি টিভি রিপোর্ট : বেতনের টাকা না দেওয়া ও চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে চ্যানেল আইয়ের পাঁচজন পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এ মামলা করেন চ্যানেল আইয়ের সাবেক উপস্থাপিকা ফারজানা ব্রাউনিয়া।
সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হক মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী শিশির হালদার।
মামলায় চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, পরিচালক জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন, মুকিত মজুমদার বাবু, আবদুর রশিদ মজুমদার পারভেজ ও রিয়াজ আহম্মেদ খানকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় ফারজানা ব্রাউনিয়া দাবি করেছেন, তিনি চ্যানেল আইয়ের বিপণন ব্যবস্থাপক (ইভেন্ট) পদে ২০১৪ সালে যোগ দেন। পরে তিনি চ্যানেল আইয়ে ‘স্বর্ণকিশোরী’ নামের একটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেন। চ্যানেল আইয়ে তাঁর বেতন ছিল এক লাখ টাকা।
মামলায় ফারজানা ব্রাউনিয়া আরও দাবি করেন, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় তিনি ছাত্রদের পক্ষে কথা বলেন। তখন কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে তাঁকে চ্যানেল আইয়ে নিষিদ্ধ করা হয়। পরে তিনি চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর নিষিদ্ধ করার বিষয় আপত্তি জানান। তখন তাঁকে আশ্বস্ত করা হয়, যত দিন তাঁকে লিখিতভাবে বরখাস্ত না করা হয়, তত দিন তাঁকে বেতন দেওয়া হবে। পরবর্তীকালে তাঁকে কোনো বেতন দেওয়া হয়নি।
মামলায় ফারজানা ব্রাউনিয়া অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর থেকে চলতি মাসের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেতন–ভাতাসহ তাঁর পাওনা দাঁড়িয়েছে ৭১ লাখ টাকা। পাওনা পরিশোধ না করায় তিনি ২ সেপ্টেম্বর আইনি নোটিশ দেন। কিন্তু নোটিশের জবাব পাননি। বরং ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় তাঁর গাড়ি থামিয়ে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। সন্ত্রাসীরা তাঁর কাছে ৫০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছেন বলেও মামলায় অভিযোগ করেন ফারজানা ব্রাউনিয়া।
মামলাটি মিথ্যা: চ্যানেল আই
এদিকে মামলা দায়েরের ঘটনায় চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ ও পরিবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং মিথ্যা মামলায় তাদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে। আজ এক বিবৃতিতে তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফারজানা ব্রাউনিয়াকে পাওনা পরিশোধ না করা এবং তাঁর কাছে ৫০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ হাস্যকর ও মিথ্যায় পরিপূর্ণ। মামলার আবেদনে যেসব অযাচিত ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা খুবই দুঃখজনক।
চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফারজানা ব্রাউনিয়া কোনোকালেই চ্যানেল আইয়ের স্থায়ী কোনো পদে কর্মরত ছিলেন না। স্বর্ণকিশোরী নামের অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়েছিল এবং সে অনুযায়ী তাঁকে সম্মানী দেওয়া হতো। ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে অনুষ্ঠানটি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে চ্যানেল আইয়ের কাছে ফারজানা ব্রাউনিয়ার কোনো পাওনার প্রসঙ্গটি অবান্তর।
চ্যানেল আইয়ের পাঁচজন পরিচালককে ব্যক্তিগত আক্রোশে অযথা হয়রানি, সম্মানহানি কিংবা অন্য কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিলে এ মামলা করা হয়ে থাকতে পারে বলে চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ মনে করছে। তারা বলেছে, মামলাটি মিথ্যা। চ্যানেল আইয়ের পাঁচজন পরিচালক আইনগতভাবে এটি মোকাবিলা করবেন।