জয় বাংলাদেশ : নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের জন্য দেয়া খাদ্য ভাইচার সুবিধা শেষমেষ বন্ধ হচ্ছে । এরই মধ্যে সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামসের প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে, শহরের অভিবাসী পরিবারগুলির জন্য খাদ্য ভাউচার সরবরাহ আর থাকছে না। এই প্রোগ্রামটি শহরের হোটেলে আশ্রয় নেওয়া অভিবাসী পরিবারগুলোকে তাদের প্রয়োজনীয় খাবার ও দৈনন্দিন সামগ্রী কেনার জন্য প্রিপেইড ডেবিট কার্ড দিতো। তবে বছরের শেষ পর্যন্ত অভিবাসী পরিবারগুলোকে এই সুবিধা দেওয়া হবে এবং এরপর থেকে শহর কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে সরাসরি খাবার পৌঁছে দেবে।
মেয়র অ্যাডামস এক বিবৃতিতে বলেন, আশ্রয়প্রার্থী প্রোগ্রামের জন্য আরও কার্যকর ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি প্রয়োগের লক্ষ্যে কাজ করছে সিটি। গত দুই বছরে ২ লাখ ২২ হাজারেরও বেশি অভিবাসীকে সহায়তা প্রদান এবং আশ্রয় ব্যবস্থাপনায় প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা হয়েছে।
মেয়র অ্যাডামস এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সাম্প্রতিক আলোচনার পর এমন সিদ্ধান্ত আসে। যেখানে তারা নিউইয়র্ক সিটির অবকাঠামো, জননিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। অ্যাডামস বলেন, নিউইয়র্ক সিটিকে এগিয়ে নিতে আমাদের অবশ্যই ফেডারেল প্রশাসনের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।
এই প্রোগ্রামটি চালুর পর থেকে প্রায় ২ হাজার ৬শ অভিবাসী পরিবারকে প্রায় ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের প্রিপেইড ডেবিট কার্ড সরবরাহ করা হয়েছে। চার সদস্যের একটি পরিবারকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩৫০ ডলার মূল্যের ভাউচার দেওয়া হয়। যা তাদের স্থানীয় বাজার থেকে খাবার কেনার সুযোগ করে দেয়।
দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারে অভিবাসনকে তার এজেন্ডার শীর্ষে রেখেছিলেন তিনি। দেশের দক্ষিণ সীমান্তে, তার ভাষায় ‘নজিরবিহীন শৃঙ্খলা’ আরোপ করার অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি।
নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প অঙ্গীকার করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম দিনেই তিনি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবৈধ অভিবাসী বহিষ্কার অভিযান শুরু করবেন। প্রচারের পুরো সময়জুড়ে ট্রাম্প অভিবাসনকে একটি সংকট হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি অবৈধ অভিবাসন এবং নতুন অভিবাসী আটকানোর লক্ষ্যে এক রাশ বিতর্কিত নীতি দ্রুত বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার করেছেন।
এদিকে নির্বাচিত হতে গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প একটি গণ নির্বাসন পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন,আমার প্রথম কার্যদিবস থেকে আক্রমনাত্মক অভিবাসন নীতি প্রয়োগে অভিযান শুরু করা হবে। যার আওতায় অপরাধমূলক রেকর্ডসহ অবৈধ বাসিন্দাদের নির্বাসন করা হবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন সংক্রান্ত আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের এই নির্দেশনা মার্কিন সংবিধানবিরোধী এবং যদি ক্ষমতা গ্রহণের পর সত্যিই এই নির্দেশনা কার্যকর হয়, তাহলে সংবিধান লঙ্ঘনের মতো গুরুতর ঘটনা ঘটবে।