জয় বাংলাদেশ: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪–দলীয় জোটের নেতা রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু ও নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মিরপুরের দেশ পলিটেকনিক কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান আলভী (১৫) নিহতের ঘটনায় তার বাবা মো. আবুল হাসান আজ সোমবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় এ অভিযোগ করেন। অভিযোগকারীর আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
আবেদনে অভিযোগটি কমপ্লেইন্ট রেজিস্টারভুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের বিধান অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। আবেদনে আসামি হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, তরীকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল–মামুন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ ও যুবলীগের সেক্রেটারি মাইনুল হাসান নিখিলসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো এবং এসব সংগঠনের নেতা–কর্মী, পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যসহ অজ্ঞাত ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, আন্দোলনরত অবস্থায় আসামিদের নির্দেশে পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৪ আগস্ট শাহরিয়ার হাসান আলভী মারা যায়।
তদন্ত সংস্থায় দাখিল করা এই আবেদনে ঘটনার স্থান হিসেবে সমগ্র বাংলাদেশ উল্লেখ করা হয়। এতে ঘটনার তারিখ ও সময় হিসেবে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত এবং ঘটনার তারিখে আহত হয়ে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন তারিখে নিহত উল্লেখ রয়েছে। আর আবেদনে অপরাধের ধরন বিষয়ে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশ্যে ১ থেকে ২৭ নম্বর আসামিদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্য আসামিরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচার গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র–জনতাকে হত্যা করে তাঁদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশ্যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করার অপরাধ।