Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeনিউইয়র্ক নিউজবাংলা সিডিপ্যাপ এন্ড অ্যালেগ্রা বাংলা মেলা অনুষ্ঠিত

বাংলা সিডিপ্যাপ এন্ড অ্যালেগ্রা বাংলা মেলা অনুষ্ঠিত

ব্রংকসে বাংলাদেশিদের ঐক্যের অনুপম দৃষ্টান্ত গড়ে উঠেছে : ড. স্যার আবু জাফর মাহমুদ
বাংলাদেশিদের বিপুল উপস্থিতি দেখে মুগ্ধ হয়েছি : এরিক এডামস্

গ্লোবাল পিস অ্যাম্বাসেডর ড. স্যার আবু জাফর মাহমুদ বলেছেন, দেশপ্রেম ছাড়া মানুষের নিজস্ব কোনো সৌন্দর্য নেই। দেশপ্রেমের শিক্ষা থেকেই আমাদের জাতিগত নিজস্বতা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি এক ব্রংকস এর ওয়াটার এভিনিউতে বাংলাদেশি আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন ইনক্ আয়োজিত বাংলা সিডিপ্যাপ এন্ড অ্যালেগ্রা বাংলা মেলার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। তিনি বলেন, ব্রংকসে বাংলাদেশিদের অসাধারণ ঐক্যের দৃষ্টান্ত গড়ে উঠেছে। সংগঠনের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক আহবাব চৌধুরীর সভাপতিত্বে মেলায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামস। সম্মানিত অতিথি ছিলেন ডিসট্রিক্ট এ্যাটর্নি ডারসেল ক্লার্ক, অ্যাটর্নি এট ল ব্রুশ এইচ ফিসার, অ্যাটর্নি এট ল পেরি ডি সিলভার, বাংলাদেশ সোসাইটি ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও বাকার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল হাসিম হাসনু, বাংলাদেশ সোসাইটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, বাংলা পত্রিকা ও টাইম টিভির সিইও আবু তাহের, বিসিসি সভাপতি মোহাম্মদ এন মজুমদার. বাংলা বাজার ব্যাবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খলিল গ্রুপের খলিলুর রহমান, জালালাবাদ এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম, সিপিএ আহাদ আলী, শাহ গ্রুপের সিইও শাহ জে চৌধুরী।

মেয়র এরিক এডামস প্রায় পনের হাজার মানুষের আড়ম্বরপূর্ণ মেলায় উপস্থিত হয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক শহরের অনেক জায়গাতেই বাংলাদেশি কমিউনিটির উপস্থিতি দেখেছি, কিন্তু ব্রুকলিনে বাংলাদেশি কমিউনিটির এই বিপুল উপস্থিতি দেখে মুগ্ধ হয়েছি। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক এক অসাধারণ শহর। আমাদের আছে বিপুল সংখ্যক অসাধারণ মানুষ আর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র। এই শহরের অন্যতম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কমিউনিটি হচ্ছে বাংলাদেশি কমিউনিটি। আমার খুব ভালো লাগে বাংলাদেশি কমিউনিটি ব্যবসা, পরিবার, মানুষের নিরাপত্তার ব্যাপারে অনেক বেশি যত্নশীল। বাংলাদেশি কমিউনিটির ধর্মবিশ্বাসও দৃষ্টান্তমূলক। মেয়র বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটি নিউ ইয়র্ক শহরের পুলিশ বিভাগ থেকে শুরু করে সরকারি সকল সেবা কার্যক্রমে ব্যবস্থার অন্যতম সহায়ক। মেয়র বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটির অগ্রগতিগুলো কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাই। এই ব্রংকসে এসে বাংলাদেশের এক ঝাঁক মানুষের সঙ্গে আমার সাক্ষাতের সুযোগ হলো। একই রকম বাংলাদেশিদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়, কুইন্স থেকে শুরু করে অন্যান্য শহরেও। সবাই একসঙ্গে আমরা পৃথিবীর বিখ্যাত ও মহৎ শহর নিউইয়র্ককে গড়ে তুলছি।

নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি সমাজের প্রথম হোম কেয়ার বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস অ্যালেগ্রা হোম কেয়ার ইনক্ এর প্রেসিডেন্ট এন্ড সিইও, পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস ও আবু জাফর মাহমুদ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ড. স্যার আবু জাফর মাহমুদ তার ভার্চুয়াল বক্তব্যে বলেন, নিউইয়র্কে আমাদের দুটি পরিচয়। এক আমরা বাংলাদেশি। আরেকটি পরিচয় হচ্ছে আমরা বাংলাদেশি আমেরিকান। এই মেলা শুধু বিনোদনের নয়। এই মেলা আমাদের বাংলাদেশিদের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন অনেক দৃঢ় করতে পারে। এই মেলা আমাদের তুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে পারে অনেকগুলি অনুসরনীয় দৃষ্টান্ত।

আবু জাফর মাহমুদ বলেন, ১৭ বছর আগে আমিই বাঙালি সমাজে হোম কেয়ার শব্দটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম। এটি আমার গর্বের বিষয়। আমার এই উদ্যোগের পেছনে মূল যে শিক্ষাটি কাজ করেছে সেটি আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমি বিশ্বাস করি, জন্মের পর আমি প্রতিবেশি ও পরিবারের কাছ থেকে যে যত্ন ও সেবা পেয়েছি সেটির কোনো তুলনা নেই। সেবার কোনো বিনিময় হয় না। সেটিই আমার প্রাকৃতিক প্রাপ্তি। সেবা যখন বাণিজ্য হয়ে যায়, তখন আর সেখানে মনুষ্যত্ব বলে কিছু থাকে না। আমরা যে ভালোবাসাভিত্তিক সমাজের স্বপ্ন দেখি, সেখানে ভালোবাসা ও আন্তরিকতার বন্ধন বাড়াতে হবে। এই বিশ্বাস নিয়েই আমরা আমেরিকান। কিন্তু আমরা অন্য আমেরিকানদের মতো হারিয়ে যেতে চাই না। যেই স্রোত আমাদের নয়, সেই স্রোতে আমরা হারিয়ে যেতে চাই না।

আবু জাফর মাহমুদ বলেন, প্রতি মুহূর্তে আমরা যুদ্ধে আছি। এই যুদ্ধ হচ্ছে জীবন গড়ার। এই যুদ্ধ মানবতার। তিনি ব্রংকস এ বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন ইনক্ এর মেলার আয়োজনকে বাংলাদেশি সাংস্কৃতির মেলা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের যা কিছু ভালো, আমাদের যা কিছু নিজস্বতা তা এই মেলার মাধ্যমে আমরা তুলে ধরছি। আমরা এই মেলার মাধ্যমে আমাদের ভালোবাসা, উদারতার মেলবন্ধন গড়ে তুলছি। আমরা আমাদের সম্পর্কের সম্প্রসারণ করছি। এর অংশ হিসেবেই আমরা বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের কাচারিঘর গড়ে তুলছি এই নিউইয়র্কের শহরে শহরে। ব্রংকসে মার্শাল এর শো রুমের পাশে আপনাদের কাচারিঘর গড়ে উঠছে। সেখানে আপনারা যাবেন, নাস্তা করবেন, আলোচনা করবেন, নিজেদের মধ্যে সম্প্রীতির অনুশীলন করবেন। এই কাচারি ঘর হবে আপনাদের আপন ক্ষেত্র।

বাংলাদেশি আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন ইনক্ আয়োজিত বর্ণাঢ্য মেলায় বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন পণ্য সামগ্রির বহু সংখ্যক স্টল বসে। সকাল থেকে শুরু হওয়া মেলা বিকেল নাগাদ অগণন নারী পুরুষ শিশুর এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। মঞ্চে চলতে থাকে একের পর এক অতিথিদের বক্তব্য ও বিশিষ্ট শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা। মেলায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলা সঙ্গীতের জনপ্রিয় শিল্পী রিজিয়া পারভীন, বাউল শিল্পী কালা মিয়া ও সেলিম চৌধুরী।

মেলায় সর্বিক তত্বাবধানে ছিলেন ডাঃ জন্নুন চৌধুরী, মীর বাশার, কমিউনিটি এক্টিভিষ্ট আব্দুর রহিম বাদশা, মোমেনুল ইসলাম, রিয়াজ উদ্দিন কামরান, মামুন আহমদ, হাসান আলী, মকন মিয়া, মামুম রহমান, সৈয়দ গৌছুল হোসেন, সহ সভাপতি মোহাম্মদ সাদি মিন্টু ও সৈয়দ ইলিয়াস খছরু, বাকা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম ডি আলাউদ্দিন, সোহেল আহমদ, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ভূইয়া, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ হোসেন, প্রচার ও গণ সংযোগ সম্পাদক লিয়াকত আলী, স্কুল শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সালমা সুমি, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রায়হান রানা জামান, আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক আব্দুর রহমান দুলাল, ক্রীড়া ও বিনোদন সম্পাদক শাহ ইকবাল রাজু, কার্যকরী সদস্য জে মোল্লা সানি ও চৌধুরী মোমিত তানিম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাম মেলা প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক আহমদ ফয়ছল, বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব সোহেল আহমদ, যুগে সদস্য সচিব সালমা সুমি,প্রধান সমন্বয়কারী রায়হান জামান রানা, ইভেন্ট সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম ভূইয়া, মেলা প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মাকসুদা আহমদ ও লিয়াকত আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম ডি আলাউদ্দিন, নব নির্বাচিত সাধারণ শাহ বদরুজ্জামান রুহেল. নব নির্বাচিত সভাপতি সারওয়ার চৌধুরী। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন আশরাফুল হাসান বুলবুল।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments