জয় বাংলাদেশ: বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ পাওনা অর্থ চেয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি। ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির আরেক গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ আদানি গ্রুপ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ৮০ কোটি ডলার পায়। এ পাওনার জন্যই প্রধান উপদেষ্টার কাছে গৌতম আদানি চিঠি লিখেছেন।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, আমরা যখন বাংলাদেশকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বজায় রাখছি, সেই সময়ে ঋণদাতারা আমাদের ওপর কঠোর হচ্ছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে থেকে আমরা যে ৮০ কোটি ডলার পাই, সেই অর্থ দ্রুত পরিশোধ করার জন্য হস্তক্ষেপ করতে আপনাকে অনুরোধ করছি। বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ যে পাওনা হয়, তা নিয়মিত ভিত্তিতে পরিশোধ করার জন্যও তিনি অনুরোধ করছেন।
একটি আধুনিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও প্রয়োজনীয় সঞ্চালনব্যবস্থা তৈরি করতে আদানি পাওয়ার ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনার দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতি আমি আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনরায় ব্যক্ত করছি।
ভারতের ঝাড়খান্ডের গড্ডায় ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আদানি গোষ্ঠী বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।সম্প্রতি খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে বাংলাদেশে আট থেকে নয় মাস ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ আদানির ৮০ কোটি ডলার পাওনা হয়েছে। এ অর্থ পেতে এক বছর ধরে আদানির পক্ষ গোষ্ঠীটির কর্ণধার গৌতম আদানি থেকে শুরু করে কোম্পানির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে গেছে।
এর আগে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনের বরাতে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছিল, বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ বকেয়া পরিস্থিতি ‘টেকসই নয়’ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে আদানি গোষ্ঠী মনে করে। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে আদানি পাওয়ার বলেছে, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং তাদের জানিয়েছি যে পরিস্থিতি আর টেকসই পর্যায়ে নেই। কারণ, আমরা একদিকে যেমন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি বজায় রাখছি, অন্যদিকে তেমনই আমাদের ঋণদাতা ও সরবরাহকারীদের কাছে দেওয়া অঙ্গীকারও রয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থ পরিশোধের দায় বাংলাদেশের সার্বিক জ্বালানি সংকটেরই একটি অংশ। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ–সংক্রান্ত দায়ের পরিমাণ ৩৭০ কোটি ডলারে উঠেছে।
আর জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, আদানি বাংলাদেশের কাছে ৮০ কোটি ডলার পায়, তার মধ্যে ৪৯ কোটি ২০ লাখ ডলার পরিশোধ বিলম্বিত হয়েছে।