রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডের ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেছেন, ভবনটির বিভিন্ন তলায় একাধিক রেস্টুরেন্ট ছিল। এসব রেস্টুরেন্টের কারণে পুরো ভবনজুড়ে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ রাখা ছিল। ফলে ভবনটিতে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তা দাউ দাউ করে অগ্নিচুল্লির মতো জ্বলে উঠতে শুরু করে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ১৫ মিনিটে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, দ্বিতীয় তলার রেস্টুরেন্টের চুলা থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ৪২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে অচেতন অবস্থায়, যাদের মধ্যে ৪ জন শিশু ও ২১ জন নারী ছিলেন। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া লাফিয়ে নামতে গিয়ে আহত হওয়া অনেককে আশপাশের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন আরও বলেন, হতাহতরা আগুনে দগ্ধ হননি, তাদের শরীরে পোড়া দাগ নেই। কিন্তু প্রচণ্ড ধোঁয়ায় শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে না পেরে তারা আক্রান্ত হয়েছেন। ভবনে একটিমাত্র সিড়ি। আগুন লাগার পর মানুষ ভবন থেকে নেমে আসতে পারেননি। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর আমরা আবারও তল্লাশি করছি। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি ঘটনা করব, তদন্ত হলে আগুনের কারণসহ বিস্তারিত জানা যাবে।
এদিকে অন্য একটি সূত্রের দাবি, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ণ ইউনিট, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও শেখ হাসিনা বার্ণ ইন্সটিটিউটসহ সবমিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ২১ জন। সংখ্যাটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাত পৌনে ১০টার দিকে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট ভবনে আগুন লাগে। সাততলাবিশিষ্ট ভবনের ওপরদিকের অংশটি আবাসিক। রেস্টুরেন্টে আগুন লাগার পর তা দ্রুত উপর দিকে ছড়িয়ে পড়ে৷ খবর পাওয়ার সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। রাত ১১টার দিকেও ভবনটি থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিলো। আগুন থেকে বাঁচতে অনেকেই ভবনের ছাদে ওঠেন। পরে ক্রেনের সাহায্যে তাদের নামিয়ে আনা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। এছাড়া পুলিশ, বিজিবি ও আনসারের সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করেন।