সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিস্তা বিনতে বেনজীর এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ঢাকায় ফ্ল্যাট ও কোম্পানির আংশিক শেয়ার জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৬ মে) ঢাকা মহানগর আদালতের সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে থাকা আরও ১১৩টি দলিলের সম্পদ ও গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট ক্রোক এবং অনেকগুলো কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। পরে তার আরও সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়। সেই সব সম্পদ ক্রোকের আদেশ চেয়ে দুদক আজ রোববার আদালতে আবেদন করে। শুনানি নিয়ে আদালত বেনজীর আহমেদের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমি জব্দ (ক্রোক) এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে তাঁদের নামে থাকা ৩৩টি ব্যাংক হিসাব (অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশ দেওয়া হয়।
সম্পদ জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের বিষয়ে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে আদালত বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পদ জব্দের যে আদেশ গত বৃহস্পতিবার দেন, সেটি বাস্তবায়ন শুরু করেছে দুদক। সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধের আদেশের অনুলিপি দুদকের হাতে এসেছে। পর্যায়ক্রমে আদালতের আদেশ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার কার্যালয় ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব এবং র্যাবের সাবেক ও বর্তমান যে সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাদের মধ্যে বেনজীর আহমেদের নামও ছিল। তখন তিনি আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন।
বেনজীর পরিবারের ৩৪৫ বিঘা জমি, সবচেয়ে বেশি স্ত্রীর নামেপিপি মাহমুদ হোসেন বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী-সন্তানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবগুলো থেকে কোনো অর্থ উত্তোলন করা যাবে না। কোনো সম্পদও হস্তান্তর করা সম্ভব হবে না। এগুলো আদালতের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।