জয় বাংলাদেশ : বড় ব্যবধানে নীতি সুদহার কমিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোমবার সুদহার ২৫০ ভিত্তি পয়েন্ট কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের ইতিহাসে রেকর্ড পরিমাণ নীতি সুদহার কমানো হলো, যার উদ্দেশ্য হলো ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি চাঙা করা।
পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হারে বড় পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিল। রয়টার্সের এক জরিপে নীতি সুদহার ২০০ ভিত্তি পয়েন্ট কমানোর প্রত্যাশা করা হয়েছিল। অক্টোবরে দেশটির মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ, যা ২০২৩ সালের মে মাসে ছিল ৪০ শতাংশ। অর্থ মন্ত্রণালয় আশা করছে নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি আরও কমে সাড়ে ৫ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশের মধ্যে থাকবে।
এর আগে গত জুন থেকে চার দফায় পাকিস্তান নীতি সুদহার ৭০০ ভিত্তি পয়েন্ট কমিয়েছিল। পাকিস্তানের অর্থনীতি অনেক দিন ধরেই খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার করতে সুদের হার কমানো প্রয়োজন।
স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান সুদের হার কমানোর পক্ষে বলেছে, বর্তমানে যে মুদ্রানীতি রয়েছে, তা পণ্য মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক এবং মূল্যস্ফীতি ৫ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে রাখতে পারবে। এটি একই সঙ্গে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও টেকসই ভিত্তিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে।
নীতি সুদহার কমানোর কথা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর জামীল আহমদ একটি আলোচনায় বিশ্লেষকদের বলেন, পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় অংশীদার দেশগুলো এই আশ্বাস দিয়েছে যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তাদের চলমান আর্থিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচির মেয়াদের মধ্যে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
গত সেপ্টেম্বরে আইএমএফ পাকিস্তানের জন্য ৭ বিলিয়ন বা ৭০০ কোটি ডলারের একটি ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। পাকিস্তানের দুর্বল অর্থনীতির জন্য এই ঋণ কর্মসূচি প্রয়োজন ছিল। কর্মসূচিটি ৩৭ মাস ধরে চলমান থাকবে।
পাক–কুয়েত ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট আদনান শেখ বলেন, নীতি সুদহার প্রত্যাশার বেশি কমানো এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে মূল্যস্ফীতি খুব দ্রুত কমে আসছে। তিনি মনে করেন, উৎপাদন খাত, ভোক্তা খাত, নির্মাণ এবং বস্ত্রশিল্পের জন্য সুদের হার কমানো গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে মূল্যস্ফীতি উচ্চপর্যায়ে থাকার কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে।
তবে কিছু বিশ্লেষক বলেছেন, ২০২৫ সালে মূল্যস্ফীতি আবার বাড়তে পারে। মূলত বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং খুচরা বিক্রয়, পাইকারি বাজার ও কৃষি খাতের ওপর আরোপ করা করের কারণে এটা ঘটতে পারে বলে তাঁরা মনে করেন। গত জুনে পেশ করা বাজেটে এই কর আরোপ করা হলেও আগামী জানুয়ারিতে তা কার্যকর হবে।