জয় বাংলাদেশ : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প সফল হয়নি বলে মনে করছেন দেশটির বিরোধী দলগুলো। দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতে উৎপাদন খাতের হিস্যার পরিসংখ্যান দিয়ে এ কথা বলেছে বিরোধী দলগুলো।
ভারতের বিরোধী দলগুলো বলছে, ১০ বছর আগে ভারতের জিডিপিতে উৎপাদন খাতের যে হিস্যা ছিল, এখন বরং তার চেয়ে কমেছে। খবর ইকোনমিক টাইমস।
ভারতে উৎপাদন বৃদ্ধিতে নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরপরই ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প ঘোষণা করেন। বুধবার তাঁর সেই প্রকল্পের ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। নরেন্দ্র্র মোদির দাবি, ভারতের সবখানেই তাঁর প্রকল্পের সফলতার নজির দেখা যাচ্ছে। কিন্তু দেশটির বিরোধী দলগুলোর প্রশ্ন, এই প্রকল্পে আদতে লাভ কী হয়েছে। ১০ বছর আগে ভারতের জিডিপিতে কারখানা উৎপাদনের হিস্যা ছিল ১৬-১৭ শতাংশ, এখনো তা সেই পর্যায়েই আছে।
নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘মেক ইন ইন্ডিয়ার’ সাফল্যে সারা বিশ্বেই আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান তুলে ধরে ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের অভিযোগ, ২০১৩ সালে জিডিপিতে কারখানা-উৎপাদনের হিস্যা ছিল ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ; ২০২৩ সালে তা নেমে এসেছে ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশে।
এর কারণ হিসেবে কংগ্রেস সভাপতির দাবি, মোদি সরকারের নীতির ব্যর্থ হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যানেও তার প্রমাণ মিলেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪-১৫ সালে ভারতের জিডিপিতে উৎপাদন খাতের হিস্যা ছিল ১৬ শতাংশ; ২০২৩-২৪ সালে তা নেমে এসেছে ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ। মাঝের সময়ে তা ছিল ১৬-১৭ শতাংশ।
অথচ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে জিডিপিতে উৎপাদনের হিস্যা ২৫ শতাংশে উন্নীত করতে চায়। খাড়গের অভিযোগ, ২০১১-১২ সালেও ভারতের মোট কর্মসংস্থানের ১২ দশমিক ৬ শতাংশ হতো কারখানায়; ২০২১-২২ সালে তা ১১ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, প্রথম দিকে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি ধীরগতিতে চললেও পরে তা গতি পেয়েছে। কোভিডের পরে কলকারখানায় উৎপাদনের ক্ষেত্রে সরকারের উৎসাহ ভাতা প্রকল্পে কাজ হয়েছে। রপ্তানিতেও তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
ভারতকে বৈশ্বিক উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি এই উদ্যোগ হাতে নিয়েছিলেন। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ বা ‘ভারতে তৈরি করুন’ শীর্ষক এই প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য ছিল ২৫টি নির্দিষ্ট খাতে বিপুল পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে ভারতকে ওই সব শিল্পে বিশ্বের প্রথম সারিতে নিয়ে যাওয়া।
‘মেক ইন ইন্ডিয়ার’ মাধ্যমে ভারত পরবর্তী চীন হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। এই সময়ে বেশ কিছু বড় উৎপাদন প্রকল্পে ভারতে এসেছিল, তা ঠিক। কিন্তু ভারত ও চীনের বিনিয়োগ পরিবেশের মধ্যে ব্যবধান অনেক বেশি। সে জন্য অনেকে মনে করেন, ভারতের পক্ষে এই লক্ষ্য পূরণ করা খুব সহজ নয়।