Monday, November 18, 2024
Google search engine
Homeস্বদেশ সংবাদযাদের সম্পৃক্ততা নেই, মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ

যাদের সম্পৃক্ততা নেই, মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ

জয় বাংলাদেশ: ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় করা মামলায় যাঁদের সম্পৃক্ততা নেই, দ্রুত তদন্ত করে তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য, সাংবাদিকদের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলসহ সমসাময়িক নানা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেয় প্রেস উইং।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় দেশজুড়ে মামলা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে পূর্বশত্রুতা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করা এবং চাঁদাবাজি ও হয়রানি করতেও অনেককে এসব মামলায় আসামি করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মামলায় ‘ইচ্ছেমতো’ আসামি করা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে।

প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক কয়েক দিন আগে রাজধানীর একটি থানায় এ রকম একটি মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করলে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জবাব দেন। ভুক্তভোগী ব্যক্তি যদি মামলা করেন, তাহলে তাঁকে মানা করা যায় না উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই, দ্রুত তদন্ত করে তাঁদের নাম বাদ দিতে বলা হয়েছে। পুলিশকে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ সময় ঢালাও মামলার বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থানের কথা বলতে গিয়ে উপ–প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, মামলা দেওয়া একজনের অধিকার, তিনি মামলা দিতেই পারেন। কিন্তু যাঁর বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই, সে ক্ষেত্রে বারবার বলা হচ্ছে তাঁদের যেন মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়। সরকারের এই অবস্থান এখনো আছে।

এর আগে ১২ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও ঢালাও মামলার বিষয়ে কথা বলেছিলেন। দেশে ঢালাও মামলার প্রবণতা দেখা দিয়েছে, যা বিব্রতকর বলে উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, আইনগতভাবে বিষয়টি কীভাবে সামাল (ট্যাকল) দেওয়া যায়, সে বিষয়ে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।

মামলার বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর এই নির্দেশনায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডসহ অন্যান্য ঘটনা ঘিরে যেসব মামলা হচ্ছে, সেগুলোর প্রাথমিক তদন্তে কোনো আসামির সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে মামলা থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিল। একই সঙ্গে সঠিক তথ্যপ্রমাণ ছাড়া এসব মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে যা বললেন

কাতারভিত্তিক সম্প্রচার মাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি স্পষ্ট করার বিষয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন। জবাবে পুরো সাক্ষাৎকারটি ভালোমতো শোনার কথা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, সংবিধান নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে, সেখানে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে সংসদের মেয়াদ চার বছর আনা হোক। এই পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যটি এসেছে বলে উল্লেখ করেন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, এটা অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষেত্রে নয়। দেখা যাচ্ছে যে অনেক ক্ষেত্রে ভালোমতো জিনিসটি না শুনে অনেকে শিরোনাম করে দিয়ে দিয়েছে।

অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড প্রসঙ্গ

বেশ কিছুসংখ্যক সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, যেসব অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে, সেখানে কী কারণে বাতিল করা হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁদের কার্ড বাতিল করা হয়েছে, তাঁরা যদি মনে করেন, তাহলে তাঁদের আবার আবেদন করার সুযোগ আছে।

তথ্য অধিদপ্তর তিন দফায় ১৬৭ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে। এমন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে ইতিমধ্যে সম্পাদক পরিষদ বিবৃতি দিয়েছে। সম্পাদক পরিষদ মনে করে, ঢালাওভাবে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের পদক্ষেপ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের অন্তরায়। একাধিক সাংবাদিক সংগঠনও এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments